হলি আর্টিজান মামলার আসামি শরিফুল রিমান্ডে
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে খালিদকে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসিন আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা আজ আসামি শরিফুলকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
গতকাল শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে শরিফুলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১-এর সদস্যরা।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সংঘবদ্ধ হয়ে রাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমকে হত্যা করে শরিফুল ইসলাম আত্মগোপনে চলে যান। ওই বছর ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পরিকল্পনায় বিশেষ ভূমিকা ছিল শরিফুলের।
তবে কেন রেজাউল করিমকে হত্যা করা হয়েছে সেটার ব্যাখ্যা করেনি র্যাব। তবে র্যাব জানায়, বিভিন্ন সময় মুক্তমনাদের ওপর টার্গেট কিলিংয়ের মতোই এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
মুফতি মাহমুদ জানান, শরিফুল তাঁর আমিরের নির্দেশে রাবির অধ্যাপককে হত্যা করে আত্মগোপনে চলে যাওয়ার তিনমাস পর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা করেন। ওই হামলার পর তিনি সুকৌশলে ফের আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৭ সালের অক্টোবরে তিনি প্রকাশ্যে এসে আবারো জঙ্গিদের সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেন। উদ্দেশ্য ছিল দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। কিন্তু তাঁর এসব পরিকল্পনা র্যাব একে একে ভেঙে দিতে শুরু করে। খুব চালাক হওয়ায় তিনি নিজেকে এতোদিন আত্মগোপনে রেখেছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় শরিফুল পুনরায় জঙ্গি তৎপরতাকে আবারো সংগঠিত করতে কাজ করছিলো বলে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তিনি বারবার স্থান পরিবর্তন করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়লো র্যাবের হাতে। শরিফুল রাবি অধ্যাপক হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
মুফতি মাহমুদ আরো বলেন, শরিফুল অধ্যাপক রেজাউল করিমকে হত্যার পর আত্মগোপনে থেকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার অপর জঙ্গি নেতা রিপনসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে ৩৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছিল হলি আর্টিজানে হামলার জন্য।
তবে সেসব টাকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে কারা দিয়েছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি মুফতি মাহমুদ। তবে এসব বিষয়ে আসামিকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন।
শরিফুলের জন্ম রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। তিনি বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রাজশাহী সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে অনার্সে ভর্তি হয় ২০১০-১১ সেশনে। এরপর সেখানে তিন বছর পড়াশুনার পর তিনি জঙ্গিবাদে জড়ান তাঁর অপর সহপাঠী শোভনে মাধ্যমে।