কুমিল্লায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে লাখ টাকা সহায়তা
কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ট্রাক উল্টে কয়লার চাপে পড়ে নিহত ১৩ ইটভাটা শ্রমিকের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) আক্তারুল ইসলাম আজ শনিবার সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এ ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুযায়ী, নিহত প্রত্যেক শ্রমিকদের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর এ দুর্ঘটনায় আহতরা প্রত্যেকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে এ সহায়তা করা হবে বলে জানান জনসংযোগ কর্মকর্তা।
গতকাল শুক্রবার ভোরে চৌদ্দগ্রামের গোলপাশা ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকায় এস এম কাজী অ্যান্ড কোং নামে ইটভাটায় ট্রাক থেকে কয়লা আনলোড করা হচ্ছ্লি। এ সময় একটি চাকা ফেটে যায়। তখন ট্রাকটি উল্টে পাশের একটি ঘরের ওপর গিয়ে পড়ে। সেটি এক ধরনের লেবার শেড। এখানেই ইটভাটার শ্রমিকরা মেস করে থাকতেন।
এই ঘরে মোট ১৮ জন শ্রমিক থাকতেন। তাঁদের মধ্যে একজন ঘরে ছিলেন না। দুর্ঘটনার পর দুজন বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। আর বাকি ১৫ জন ঘুমে ছিলেন। মূলত কয়লা গিয়েই ঘুমন্ত শ্রমিকদের ওপর পড়ে। শীতের মধ্যে শ্রমিকরা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। তার ওপর কয়লা পড়ে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, এক ধরনের শ্বাসরোধ হয়ে তাঁরা মারা গেছেন বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১০জন সনাতন ধর্মাবলম্বী আর বাকি তিনজন মুসলিম। তাঁরা হলেন—কনক চন্দ্র রায়, বিকাশ চন্দ্র রায়, মিলন চন্দ্র রায়, দিপু চন্দ্র রায়, রঞ্জিত চন্দ্র রায়, মনোরঞ্জন চন্দ্র রায়, অমিত চন্দ্র রায়, শংকর চন্দ্র রায়, বিপ্লব চন্দ্র রায়, তরুণ চন্দ্র রায়, মো. মাসুদ, মো. মোরসালিন ও মো. সেলিম। সবার বাড়ি নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার রাজবাড়ী, শিমুলবাড়ী, দিবাড়িয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে। আজ শনিবার সকালে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আহতদের কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকালই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহতদের লাশ নীলফামারীতে নিয়ে যাওয়া, সৎকার ও দাফন করার জন্য ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়।