‘দেশের স্বার্থেই সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান প্রয়োজন’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশ ও জনগণের স্বার্থেই সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান প্রয়োজন। বিএনপি নেতিবাচক ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি করছে। দেশের মানুষ তদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পছন্দ করেনি।’
আজ বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বরাবরই সমালোচনাকে আমাদের পথ চলার জন্য ইতিবাচক মনে করি। তবে অনেক সময় সমালোচনা রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনে না। নেতিবাচক রাজনীতি না থাকলে ১০ বছরে দেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যেত।’
বিএসআরএফ সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের জন্য বেতন কাঠামো দরকার। সাংবাদিকদের জন্য ৯ম ওয়েজবোর্ডের কাজ চলছে। এরপাশাপাশি রেডিও টেলিভিশনে কর্মরত সংবাদকর্মীদের একটি বেতন বোর্ডের বিষয়েও আলোচনা চলছে। সময়মতোই তা প্রকাশ করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সাংবাদিকদের আবাসন সুবিধার কথা বলা হয়েছে। আমরা এ অঙ্গীকার পূরণ করব। আমরা চিন্তা করছি সাংবাদিকদের ফ্ল্যাট করে দিলে তাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। তবে কারা ফ্ল্যাট পাবেন তা নির্ধারণ করবে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোই। তারাই যাচাই করে তালিকা প্রদান করবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি একজন সজ্জন মানুষ। কিন্তু তিনি একটি বৃহত্তর দলের মহাসচিব হিসেবে সম্পূর্ণই ব্যর্থ হয়েছেন। তবে তিনি নির্বাচিত হওয়ায় তাকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
বিএনপি নেতারা ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় বিপর্যয় দিবস’ পালনের কথা বলেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছে জাতীয় বিপর্যয়- এটি আসলে বিএনপির মহাবিপর্যয়, সেটা তারা পালন করতে পারে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একটি নির্বাচন করার আগে যে প্রস্তুতি দরকার, যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করা দরকার। বিএনপির সবকিছু ছিল ত্রুটিযুক্ত, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ৮০০ ক্যান্ডিডেটকে নমিনেশন দেওয়া আমাদের দেশে কখনো ঘটেনি।’
বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নাও অংশ নিতে পারে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বিএনপি যেমন আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা যদি আবার উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বিএনপি তবে ২০১৪ সালে অংশগ্রহণ না করার মতো মহাভুল করবে। আমি মনে করি বিএনপি দলগতভাবে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত ইলেকশন অবর্জারভাররা যারা এসেছিল তারা একবাক্যে বলেছে নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও উৎসব মুখর হয়েছে। এখন কার কোথা থেকে বক্তব্য নিয়ে কোন পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপিয়েছে, তা অনুসন্ধান করার বিষয় কার সাথে কোথায় কথা বলেছে। তারা জনসম্মুখে যা বলেছে, সেটি হচ্ছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।’
ডিএফপির মিডিয়া তালিকায় শীর্ষে অনেক অখ্যাত পত্রিকা দেখা যায়, এ বিষয়ে আপনি কোন পদক্ষেপ নেবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি ইতিমধ্যে দেখেছি। এ বিষয়গুলো দেখছি। আমি দায়িত্ব নিয়েছি দুই সপ্তাহ হলো। এটা আসলে বাস্তবসম্মত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
ওয়েজবোর্ড ঘোষণার পর মুষ্টিমেয় কয়েকটি পত্রিকা তা বাস্তবায়ন করে বাকিরা করে না। এ ক্ষেত্রে আপনি কী ভূমিকা রাখবেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়েজবোর্ড যাতে বাস্তবায়ন হয় সেজন্য আমরা মালিক পক্ষের সঙ্গেও আলোচনায় বসব।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির গত ১০ বছরে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রচণ্ড ভুলে ভরা। তারা আন্দোলনের ক্ষেত্রে জনগণের বিষয়-আশয় ফোকাস করেনি। তারা তাদের দলীয় স্বার্থকে ফোকাস করেছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে প্রস্তুতি দরকার ছিল তা তারা নেয়নি। তারা অলৌকিক কিছুর জন্য অপেক্ষা করছিল কি না, জানি না, এটি আপনারা অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।’
নিজের মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নির্মূল ও সুশাসন প্রতিষ্ঠান বিষয়ে কী উদ্যোগ গ্রহণ করছেন- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেগুলো অবশ্যই গ্রহণ করব।’