দুর্বৃত্তের আগুনে বাঁচতে পারলেন না আংকুরা বেগমও
ভোলায় ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু খাদিজা (৮), তার মা আংকুরা বেগম (৪০) ও আংকুরার বোন সুরমার (৩৮) শরীরে আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। এতে খাদিজা ও সুরমা মারা যান। গতকাল রোববার মারা গেলেন খাদিজার মা আংকুরা বেগমও।
গত ১৮ জানুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের খারাকান্দি গ্রামে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেলে আংকুরা বেগম মারা যান। এ ঘটনায় লালমোহন উপজেলার খারাকান্দি গ্রামে শোক চলছে। নিহত আংকুরা বেগম একই ঘটনায় নিহত শিশু খাদিজার মা ও গৃহবধূ সুরমার বড় বোন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, ছয় মাস আগে সুরমার সঙ্গে বোরহান উদ্দিন উপজেলার দেউলা এলাকার রফিকের বিয়ে হয়। এটি ছিল রফিকের তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর লালমোহনের কর্তারহাট এলাকায় ঘর ভাড়া করে থাকতেন রফিক ও সুরমা। তবে বিয়ের পর থেকেই রফিকের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না সুরমার। প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
ওই ঘটনার ১০ দিন আগে স্ত্রী সুরমাকে রেখে চলে যান রফিক। এরপর বড় বোন আংকুরা বেগমের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন সুরমা। গত শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে এক বিছানায় সুরমা, আংকুরা ও তাঁর মেয়ে খাদিজা ঘুমিয়ে পড়ে।
ওই রাতেই মাটির ঘরের পেছনে সিঁদ কেটে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। ঘরে ঢুকেই লেপ-তোশকে আগুন ধরিয়ে দিলে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই সুরমার মৃত্যু হয়। দগ্ধ হন সুরমার বড় বোন আংকুরা ও শিশু খাদিজা।
চিৎকার শুনে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দুজনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার মৃত্যু হয় শিশু খাদিজার। এরপর আংকুরা বেগমেরও শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনিও।
পারিবারিক কলহের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ওই ঘটনার পর ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মো. মোক্তার হোসেন বলেন, পারিবারিক কলহের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। তবে দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।