নওগাঁয় হাত-পা বাঁধা শিক্ষকের লাশ মিলল নদীতে
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বড় চকগোপাল এলাকার কাছে ঘুকসী নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক কলেজ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এম এম জামাল উদ্দিন (৪৮) নামের ওই কলেজ শিক্ষক পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ঘুকসী নদীর ওপর অবস্থিত ধামইরহাট সেতু থেকে কয়েক গজ উত্তরে নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে ধামইরহাট থানা পুলিশ।
নিহত জামাল উদ্দিন উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত কায়েম উদ্দিনের ছেলে। তিনি উপজেলার জগদল আদিবাসী স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড় চকগোপাল এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘুকসী নদীর পাশে অবস্থিত সামাজিক বনবিভাগের বাগানে পাতা কুড়াতে গিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি নদীর তীরে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে ধামাইরহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে। স্বজনরা খবর পেয়ে থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করে।
ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে একটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। লাশের সুরতহাল থেকে মনে হচ্ছে, গত বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে যায়। লাশের গায়ে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে যেহেতু হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশটি পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্বজনদের বরাত দিয়ে ওসি জাকিরুল বলেন, নিহত জামাল উদ্দিন গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তবে এ ব্যাপারে তাঁর পরিবারের লোকজন থানায় কোনো জিডি কিংবা অভিযোগ করেননি। তবে এর আগে গত ছয়-সাত মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরে নিজে নিজেই বাড়ি ফিরে থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেছিলেন।
নিহত কলেজ শিক্ষকের বড় ভাই ওয়াদুদ হোসেন জানান, তাঁর ভাই গত শনিবার কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। এর আগেও তিনি একবার নিখোঁজ হওয়ার কয়েক দিন পর বের হয়েছিলেন। এজন্য পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ করতে আগ্রহ দেখাননি।
ওয়াদুদ হোসেন আরো বলেন, তাঁর ভাই বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ঋণ করেছিলেন। তিনি সেসব টাকা শোধ করতে পারছিলেন না। এজন্য পাওনাদাররা তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কোনো পাওনাদার তাঁর ভাইকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন।