শরিকরা বিরোধী আসনে বসলেই ভালো : ওবায়দুল কাদের
জোটবদ্ধ হয়ে একক প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিলেও সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী ১৪ দলের শরিক নেতাদের বিরোধী দলে বসাই ভালো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিরোধী দলে নয়, সরকারে থাকতে চান—শরিক দলের নেতাদের এমন ভাষ্য গণমাধ্যমে আসার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আজ বৃহস্পতিবার এ মনোভাবে কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোট ও মহাজোটে নেতৃত্ব দেয়। এ দুটি জোটের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোটে লড়েন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। জাতীয় সংসদের ঘোষিত ফলাফলে ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই পেয়েছে ২৫৭টি আসন। জাতীয় পার্টি জিতেছে ২২টি সংসদীয় আসনে। এর বাইরে ১৪ দলের ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জাসদ (ইনু) দুটি, জাসদ (আম্বিয়া) একটি, তরীকত ফেডারেশন দুটি, জেপি (মঞ্জু) একটি আসনে জয়লাভ করেছেন। মঞ্জু ছাড়া বাকি সবাই নৌকা প্রতীকে জিতেছেন।
এরই মধ্যে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসনে বসেছে। পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছেন।
গতবার শরিক দলের নেতারা সরকারের মন্ত্রিপরিষদের থাকলেও এবার ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় শরিক দলের কাউকে স্থান দেয়নি আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে শুরু থেকেই নানা আলোচনা ডানা মেলছিল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এর মধ্যে শরিক দলের নেতারা বিরোধী দলের আসনে বসতে চান না এমন খবর আসে গণমাধ্যমে।
আওয়ামী লীগ তাদের বিশাল বিজয় উদযাপনের জন্য আগামী শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সমাবেশ থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দিনের সরকারের রূপরেখা তুলে ধরবেন। সকালে সমাবেশস্থল পরিদর্শনে যায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।
সেখানেই সাংবাদিকরা শরিক দলের নেতাদের মনোভাব সম্পর্কে ১৪ দল ও মহাজোটকে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চান। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহাজোট নামে যে বৃহত্তর ঐক্যজোট, সেটা কিন্তু নির্বাচনী জোট। ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা হলো রাজনৈতিক জোট। রাজনৈতিক জোট আমাদের থাকবেই। ১৪ দল থাকবে।’
‘(শরিক দলের) সংসদ নেতারা বিরোধী দলের আসনে বসলে এবং দায়িত্বশীল বিরোধিতা যদি করেন, সেটা সরকারের জন্যও ভালো, তাদের জন্যও ভালো।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনৈতিক জোটের প্রশ্ন যখন আসে, তখন তো আমরা একসঙ্গেই আছি। সেটা রাজনৈতিক জোট আমি সেটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। সে জোট আমরা ভাঙিনি।’
জোটে কোনো টানাপড়েন নেই উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আরো আলাপ-আলোচনা হবে। তবে এটা মনে রাখবেন, মাহজোট কিংবা জোটে অথবা ১৪ দলে কোনো টানাপড়েন নেই।’
‘আমাদের মধ্যে কোনো ব্যাপারে ভুল বোঝাবুঝি থাকলে সেটা আমরা আলাপ-আলোচনা করে নিরসন করব। এভানে কোনো প্রকার বিভেদ, কোনো প্রকার ভাঙন, কোনো প্রকার টানাপড়েন বলতে যা বোঝায়, সেটা আমাদের মধ্যে নেই,’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।