ময়মনসিংহে ঠাণ্ডায় শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর চাপ
ময়মনসিংহে ঠাণ্ডায় ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপ্রতুল শয্যার কারণে এসব রোগে আক্রান্ত শিশুদের অনেকের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের করিডোর ও ঠাণ্ডা মেঝেতে। বিপুল সংখ্যক রোগী আসায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ ও ৩ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৫০টি। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ১০০ থেকে ১২০ জন শিশু রোগীকে ভর্তি করা হয়, ওয়ার্ড দুটিতে সেখানে শীতের কারণে ভর্তি হচ্ছে দুই শতাধিক রোগী। চিকিৎসকরা জানালেন, তাদের মধ্যে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন ওয়ার্ড দুটিতে ভর্তি হওয়া মোট রোগীর প্রায় ৩৫ শতাংশ রোগী ডায়রিয়া ও ৩৫ শতাংশ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। এ হিসেবে ৫০ শয্যার ওয়ার্ড দুটিতে প্রতিদিন ছয়গুণ বেশি রোগী সেবা নিতে আসছেন।
জামালপুরের সীমা আক্তার, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কল্পনা আক্তার ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শরীফা অসুস্থ সন্তান নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সীমা ও শরীফার সন্তান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। রোগমুক্তি হওয়ায় মঙ্গলবার তাদের সন্তানদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জের শরীফা জানান, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার তাঁর সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন সে কিছুটা স্বাভাবিক।
তবে অধিকাংশ শিশুর অভিভাবকরা বলছেন, অসুস্থ সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের ঠাণ্ডা মেঝে ও করিডোরে থাকতে হচ্ছে, বিছানা মিলছে না।
৮ থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুরাই ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে আসছে বলে জানালেন চিকিৎসকরা। আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পাঁচ বছরের কম বয়সীরা সবাই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালের শয্যা এবং ওয়ার্ড অপ্রতুল, জনবল কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ সময়টাতে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়, ফলে রোগীর চাপও বাড়ে। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার চেয়ে রোগীর চাপ অনেক বেশি। বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আরো বেশি ওয়ার্ড, বিছানা ও চিকিৎসক দরকার। অতিরিক্ত রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পাশাপাশি শীতকালীন ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ থেকে সন্তানদের দূরে রাখতে বাড়িতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষা, খাবার ঢেকে রাখা ও শিশুদের গরমের ছোঁয়ায় রাখতে অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।