নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান
দেশের হাজার হাজার মেধাবী তরুণের জন্যে আরো কর্মসংস্থান তৈরি করতে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন চত্বরে ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ-২০১৯) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রতিবছর হাজার হাজার মেধাবী তরুণ-তরুণী সাফল্যের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা শেষ করে। তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি খুব জরুরি এবং এক্ষেত্রে আপনাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি তুলনামূলক সুযোগ সুবিধা ও স্থানীয় সামর্থ্যের ভিত্তিতে নতুন শিল্প ও কলকারখানা স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিনিয়োগে সহায়তা করবে।’
এ ছাড়া অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনকারী সরকারের সমুদ্রভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন (ব্লু- ইকোনমি) কার্যক্রমের উল্লেখ করে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ‘ব্লু-ইকোনমির’ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্টদের বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রতি মনোযোগী হওয়া, নতুন বাজার সৃষ্টি ও পণ্যের বহুমুখীকরণের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
আজ বুধবার মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি : বাসস
আবদুল হামিদ বলেন, ‘পণ্যের মান উন্নয়নের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পণ্যের ব্র্যান্ডিং এবং সেগুলোকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার ব্যাপারে আপনাদের বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।’ তিনি পাটভিত্তিক বিভিন্ন পণ্য, খাদ্য, হিমায়িত খাদ্য, হিমায়িত চিংড়ি, আম, আলুসহ অন্য কৃষি ভিত্তিক সামগ্রীর রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশ্ববাজারে স্থানীয় দেশীয় পণ্যের প্রসারের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের ২০২টি দেশে পণ্যসামগ্রী রপ্তানি করে বাংলাদেশের ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ মিলিয়ন ডলার। বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
পরে মাসব্যাপী ‘ডিআইটিএফ-২০১৯’ উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি কয়েকটি স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে। আজ থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এ মেলা ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় ৬০টি প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন, ৩৮টি প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ২০টি প্যাভিলিয়ন, ২৬টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন, ১৮টি সাধারণ প্যাভিলিয়ন ও ২২টি খাবারের স্টলসহ মোট ৫৫০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে।
ভারত, ভুটান, পাকিস্তান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, হংকং, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, মৌরিশাস, রাশিয়া, ইরান, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণ করছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নবনিযুক্ত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য সচিব এম. মফিজুল ইসলাম, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য, সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, দেশি ও বিদেশি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।