ডেপুটি স্পিকারও চাইবেন বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদ
একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। আজ রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এর মধ্য দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদের নিজের কার্যক্রম শুরু করলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
দুপুরে গাড়িতে করে জাতীয় সংসদে আসেন জাপা চেয়ারম্যান। আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ঊর্ধ্বতন নেতারা। গাড়ি থেকে নেমে হুইলচেয়ারে করে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন এরশাদ। শপথ গ্রহণের সময় তিনি জি এম কাদেরের সহযোগিতায় হুইলচেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে শপথ নেন।
শপথ গ্রহণ শেষে এইচ এম এরশাদ সংসদ ভবনে বিরোধীদলের নেতার কক্ষে যান এবং সেখানে রাখা চেয়ারে বসেন। তখন তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিরোধীদলের নেতার চেয়ারে বসেই সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি গর্বিত বিরোধীদলের নেতার চেয়ারে বসতে পেরে। জাতীয় পার্টিকে সত্যিকারের শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এ বিষয়ে সব ধরনের চেষ্টা আমার অব্যাহত থাকবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিরোধীদলের নেতা ও চিফ হুইপের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করব।’
‘অনেক দেশে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারও বিরোধীদল থেকে নেওয়া হয়, সেই আবেদনও সরকারের কাছে করা হবে,’ যোগ করেন এরশাদ।
এ সময় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা দলের চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘স্যার, দীর্ঘ ২৭ বছর পর আপনিই কোনো পুরুষ বিরোধীদলের নেতা হলেন।’
এ সময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ফফরুল ইমামসহ পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। জাতীয় সংসদের ঘোষিত ফলাফলে ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই পেয়েছে ২৫৭টি আসন। মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টি জিতেছে ২২টি সংসদীয় আসনে। আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হবে।
অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাতটি আসনে জয় পেয়েছে। বিএনপির ইতিহাসে এমন কম আসন আর কখনই পায়নি। যদিও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ আনা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিতরা শপথ গ্রহণ না করে এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
জাতীয় পার্টি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারের মন্ত্রিপরিষদের অংশ নিয়েছিল; পাশাপাশি দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বিরোধীদলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এইচ এম এরশাদ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত।
এবার জাতীয় পার্টির ভূমিকা কী হবে—এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে গত শুক্রবার সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ মীমাংসা দিয়ে জানান, তিনি দলের চেয়ারম্যান হিসেবে বিরোধীদলীয় নেতা এবং দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বিরোধীদলের উপনেতার দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর শনিবার তিনি আরেক চিঠিতে জানান, বিরোধীদলের চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করবেন দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।