আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের কারণ কী
আওয়ামী লীগের এই নিরঙ্কুশ জয় কীভাবে এলো? দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানালেন, এমন ফলাফলের জন্য দুই-আড়াই বছর আগ থেকেই তাঁরা পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নেন। বিএনপির ভোট কমার কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, ভোটের আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছিল দলটি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় দুই দলের ভোটের পার্থক্য অবাক করার মতো। এ নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়লেও প্রদত্ত ভোটের ৯৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগের ছয়জন প্রার্থী। ৯১ থেকে ৯৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মহাজোটের ১১০ জন। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ৮৯ জন।
দল ভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায় এ নির্বাচনে ৮৫ ভাগ ভোটই পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে। সেখানে বিরোধীজোট বিএনপির ভোট এসেছে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। ৮৩টি আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা পাঁচ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। আর জামানত হারিয়েছেন ধানের শীষের ১৬৩ জন। এমন পরিণতির জন্য বিএনপির রাজনীতিকেই দায়ী করছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ভোট হচ্ছে একটা যুদ্ধের মতো। এই যুদ্ধ হওয়ার আগেই বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট যুদ্ধের মাঠ ছেড়ে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, যে ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের ফলাফল নিম্নগামী হয়েছিল, একই ধারাবাহিকতায়, একই কারণে, তারা এবার জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। জনগণ তাদের বর্জন করেছে।
বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, বড় দুই দলের নির্ধারিত ভোট পর্যায়ক্রমে বেড়েছে। কিন্তু এবারের দেখা গেছে বিশাল তারতম্য। ২৯৮টি আসনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের ২৫৭ জন জয়ী হয়েছে। সেখানে বিরোধী পক্ষ বিএনপি পেয়েছে মাত্র পাঁচটি আসন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমন ফলাফল কীভাবে এলো তা জানিয়েছেন দলের নির্বাচন পরিচালনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত দুই সদস্য। ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার ভাষ্যমতে, এখানে একটি টিমওয়ার্ক ছিল, যে টিমের প্রধান ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
গত দুই থেকে আড়াই বছর যাবত এই নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করছিলো বলে জানালেন ড. সেলিম মাহমুদ।
ব্যালট পেপারে ভোটদানকারীদের তুলনায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটদানকারীর সংখ্যা অনেক কম ছিল। নির্বাচন কমিশন যে ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করেছে তাতে দেখা যায়, সেখানে গড়ে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশের কম।
ইভিএম প্রসঙ্গে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, এটা যেহেতু একেবারে নতুন, এর সঙ্গে আমাদের জনগণের অভ্যস্ততা নেই। ফলে ভোটগ্রহণে কিছুটা ধীরগতি ছিল।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সহনশীল আচরণের জন্য নির্বাচনী সহিংসতাও এবার তুলনামূলক কম হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।