নির্বাচনের ফল বাতিলে সর্বোচ্চ আদালতকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এ ক্ষেত্রে তারা সর্বোচ্চ আদালতকে স্বপ্রণোদিত (সুয়োমুটো) হয়ে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এ দাবি জানান।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘যে নির্বাচন হয়েছে তা জাতি গ্রহণ করেনি। অতীতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এসব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ করেছে। যে নির্বাচন হয়েছে তা বাতিলের জন্য সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে সুয়োমুটো হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আশা করব প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা এ ক্ষেত্রে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবেন।’
সুপ্রিম কোর্টে সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহসভাপতি মো. গোলাম রহমান ভুঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘নানা আশঙ্কার পরও প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসের পর ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের পরে অনেক প্রার্থীকে গ্রেপ্তার, অনেকের ওপর হামলা ও নির্বাচনী প্রচারে বাধা সৃষ্টি করা হয়। আমাদের সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার খোকনের ওপর গুলি চালানো হয়। এগুলোর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।’
‘এ নির্বাচনকে নির্বাচন বলা যায় না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সরকারকে অনুরোধ করব এসব মামলা যেন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়,’ যোগ করেন জয়নুল আবেদীন।
হাইকোর্টের কিছু বিচারপতিকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘যখন নির্বাচন কমিশন কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে তখন অতীতে হাইকোর্ট থেকে হস্তক্ষেপের কোনো নজির দেখিনি। কিন্তু এবার হাইকোর্ট থেকে অনেক প্রার্থীর প্রার্থিতা স্থগিত করা হয়েছে। সব বিচারপতিকে বলব না, তবে যারা এগুলো করেছেন তারা হাইকোর্টকে জনগণের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। এটা করে তারা শপথ লঙ্ঘন করেছেন। তাদের শপথ ছিল ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে আইন অনুযায়ী বিচার করবেন। কিন্তু মনে হয়েছে ভয়-ভীতির কাছে নত হয়ে তারা এসব কাজ করেছেন। যারা এসব কাজ করেছেন সেসব বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানাই।’
সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে সেটি কোনো নির্বাচন নয়। এ নির্বাচনের পরই খুলনার একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়। যমুনা টিভি বন্ধ করা হয়েছিল, পরে খুলে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকরা অনেক কথা বলতে ইচ্ছুক, কিন্তু ভয়ে বলতে চান না। নির্বাচনের নামে যেটা হয়েছে তা জাতির সঙ্গে, সংবিধানের সঙ্গে প্রতারণা। এ নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’