শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেও ভোটের সময় থাকবে রৌদ্রোজ্জ্বল
দেশব্যাপী বইছে নির্বাচনী উত্তাপ। রাত পোহালেই গরম গরম ভোট। কিন্তু আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, দেশে এখন শৈত্যপ্রবাহ চলছে। কয়েকদিন ধরে চলা এই শৈত্যপ্রবাহ আরো কয়েকদিন ধরেই চলবে।
তবে কী আগামীকাল রোববার দেশের বেশিরভাগ মানুষকে শৈত্যপ্রবাহে কাঁপতে কাঁপতে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে? আবহাওয়া কার্যালয় বলছে, না। দিনের বেলাটা বেশ ভালোই যাবে। রোদ থাকবে। আকাশ থাকবে পরিষ্কার। ভোটের উত্তাপ বাড়াবাড়ি হলে ক্ষেত্রবিশেষে উষ্ণপ্রধান অঞ্চলের দিকে তাপমাত্রার সঙ্গে মিলেমিশে ঘামও ছুটে যেতে পারে। সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা যদি হয়, তাহলে তো তাই হওয়ার কথা!
তবে হ্যাঁ, ভোট গণনার সময় অর্থাৎ বিকেল থেকে পড়তে শুরু করবে তাপমাত্রা। সেটি পরের দিন সূর্য উঠার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত থাকবে। সেই হিসাবে রাতে ভোটের গরম গরম ফল সংগ্রহ করতে হবে ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়।
আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, দেশে চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আগামীকাল রোববারও একই পরিস্থিতি বিরাজ করবে। সূর্যকিরণের উপস্থিতির কারণে দিনের আবহাওয়া তুলনামূলক শুষ্ক ও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হলেও সন্ধ্যার পর থেকে দেশের বেশিরভাগ অংশে তীব্র, মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করবে।
ঢাকার আগারগাঁও আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। আগামীকাল রোববারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ রকমই হবে বলে ধারণা করছি।’
‘এ ছাড়া দিনের বেলায় স্থানভেদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ২৩, ২৪, ২৫ বা ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা বিরাজ করবে। কিন্তু সন্ধ্যার দিক থেকে শুরু হবে শৈত্যপ্রবাহ। এ পরিস্থিতি নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের ৩-৪ তারিখ পর্যন্ত চলতে পারে।’
আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘দেশে মূলত চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। প্রথমে এটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাজশাহী, রংপুর অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে ও পরে বিস্তারিত হয়ে দেশের মধ্যাঞ্চল অর্থাৎ ঢাকা, ময়মনসিংহসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। আরো পরে এ শৈত্যপ্রবাহ চটগ্রামসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তারিত হয়।’
আব্দুল মান্নান আরো বলেন, ‘সাধারণত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে সেটিকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। দিনের বেলা সূর্যকিরণের প্রভাবে বেশিরভাগ সময়ই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ অনুভব করা যায় না। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ করে মাঝরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এটি তীব্র আকার ধারণ করে। এ সময় তীব্র ও হালকা বাতাস প্রবাহিত হয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও এর প্রভাব কমে আসে। আগামী কয়েকদিন দেশে এ রকমই আবহাওয়া বিরাজ করবে।’
বিশেষ করে রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে তীব্র থেকে মাঝারি; ঢাকা, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ফেনী, কুমিল্লা, সীতাকুণ্ড অঞ্চলে মাঝারি থেকে মৃদু এবং কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেট অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শৈত্যপ্রবাহের কারণ জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, কয়েকটি কারণে এ অঞ্চলে এ রকম শৈত্যপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বিস্তার, উত্তর-পশ্চিম বিশেষ করে নেপালের দিক থেকে শুষ্ক ও ঠাণ্ডা বায়ু বয়ে যাওয়া ও জেড বায়ুর প্রভাব। দেশে বর্তমানে এর সবকটি প্রভাবকই ক্রিয়াশীল।