কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না : এইচ টি ইমাম
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না, উচিত নয়। তাহলে জনমনে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। কারণ এতে চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টারে এইচ টি ইমাম এই কথা বলেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশন মানে সিইসি ও চার কমিশনার যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো কমিশনার বা যে কেউ একা কিছু বলা সমীচীন হবে না। কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, সকালে গণমাধ্যমে একজন কমিশনারের বক্তব্য শুনেছি। আমরা নিজেরাই হচকচিত হয়ে গেছি। কারণ একজন কমিশনার এককভাবে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না। যা সিদ্ধান্ত হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দেবে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সে সিদ্ধান্ত জানাবেন। কমিশন থেকে বের হয়ে আরেকজন ব্যক্তিগত মত দেবে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
এইচ টি ইমাম বলেন, কমিশন বৈঠকে কোনো কমিশনার ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা বাইরে এসে বলতে পারেন না। এতে মানুষের কাছে ভুলবার্তা যেতে পারে। কারণ কমিশনের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি দল হিসেবে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি। অনেকের কাছে আমরা নির্দেশও দিতে পারি। কিন্তু তা না করে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার আসি এজন্য যে অন্যরাও এটা করে। কারণ সবাই মনে করে কমিশনের কাছে বিচার পাব। আমাদের কাছে কমিশন হচ্ছে ভরসাস্থল। এ বিষয়টি অন্যরা পালন করেন না।
গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক বর্জন সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে শুধু হেয় নয়, কমিশনের সামনে এমনভাবে কথা বলেন, যেগুলো আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন কমিশনকে কেউ কেউ টেবিল চাপড়ে কথা বলেন বা কেউ অশোভন উক্তি করেন। এতে আমরাও ছোট হয়ে যাই। কমিশনকে আমরা এ বিষয়টিও জানিয়েছি।
এইচ টি ইমাম বলেন, অর্থের অনেক চালানের মধ্যে একটি ধরা পড়েছে। কালো টাকার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের দিন, অনলাইন মানি ট্রান্সফার বা মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ করার বিষয়ে কমিশনের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি এনজিওর বিষয়ে তাদের অবজারভেশন তুলে ধরা হয়েছে। এনজিও পর্যবেক্ষণ ব্যুরো থেকে দেখলাম ১১৯টির মধ্যে ৭৫টির নিবন্ধন নেই। অধিকারের বিষয়ে মামলা আছে, এনজিও ব্যুরো বলছে তাদের নিবন্ধনই নেই। তাদের আচরণ ও কথাবার্তায় তারা বিকৃত তথ্য দিয়ে, যেগুলো রীতিমতো নির্বাচন কমিশন নয় রাষ্ট্রের জন্য অপমানজনক। এনফ্রেলের (ব্যাংককভিত্তিক আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা দ্য এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন) লোকাল চ্যাপটার অধিকার। এর চেয়ারম্যান আদিলুর রহমানের বিরুদ্ধ মামলাও আছে। এনফ্রেল এবং অধিকার এক ও অদ্বিতীয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, আমরা কমিশনকে বলেছি আপনারা সবচেয়ে উঁচু প্রতিষ্ঠান। আমরা টেবিলও চাপড়াবে না, ধমকও দেব না।
এ সময় এইচ টি ইমামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার, ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।