‘ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট পাওয়া দুরূহ হয়ে উঠেছে’
বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠছাড়া করতে ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা না চালাতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নওগাঁ-৬ (রানীনগর ও আত্রাই) আসনের বিএনপির প্রার্থী আলমগীর কবির।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় নওগাঁ শহরে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আলমগীর কবির। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হক সনি, আত্রাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ রেজাউল ইসলাম রেজু, আত্রাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান একরামুল বারী রঞ্জু, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলমগীর কবির বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে আত্রাই ও রানীনগর উপজেলার বিএনপি-নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন ও পুলিশি হয়রানির এক বীভৎস চিত্র ফুটে উঠেছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, এই ভীতিকর পরিস্থিতি ততই যেন বাড়ছে। এ পরিস্থিতির কারণে বিএনপির সাধারণ কর্মী-সমর্থক পর্যন্ত এলাকা ছাড়তে হতে বাধ্য হচ্ছে। জীবননাশ ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বহু ভোটকেন্দ্রে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট পাওয়া এখন দুরূহ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ৩০ ডিসেম্বর অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আলমগীর কবির অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়িয়ে পুলিশ তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৪ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসব অভিযোগের কোনো মামলা পুলিশ গ্রহণ করেনি। এ ছাড়া বিএনপির প্রচার মাইক, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এসব অভিযোগের স্তূপ জমে গেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হক সনি বলেন, নওগাঁ ছয়টি আসনের প্রতিটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে নওগাঁ-৪ (মান্দা) ও নওগাঁ-৬ আসনে সবচেয়ে বেশি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন থেকে বিএনপিকে মাঠছাড়া করতে মামলা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা না চালানোর জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের হয়রানির যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সত্যি নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তারা ঢালাওভাবে যে অভিযোগ করছে, তা ভিত্তিহীন। তারা সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী যেসব অভিযোগ করেছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-সমর্থকরাই আমাদের কর্মীদের হামলা চালাচ্ছে, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করে নয়, ভোটের মাধ্যমে জিততে চায়।’