মানিকগঞ্জে বিএনপির প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা
মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর ও হরিরামপুর উপজেলা এবং জেলা সদরের তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের প্রচারণাকালে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে হরিরামপুর উপজেলার দিয়াবাড়ি এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ দিকে এই ঘটনার পর আওয়ামী লীগের অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর এবং মারধরের অভিযোগে বিএনপির প্রার্থীসহ তাঁর কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা।
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আজ বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খান শান্তর হরিরামপুর উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগ করার কথা ছিল। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১১টার দিকে সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রাম এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে মঈনুল ইসলাম খান শান্ত হরিরামপুরের দিকে রওনা হন। পথে হরিরামপুরের কাণ্ঠাপাড়া এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন বহরে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর যাত্রাপুর এলাকায় বিচারপতি নূরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের সামনে বহরটি পৌঁছালে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়িবহরে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় বহরে থাকা বিএনপির প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বহরটি হরিরামপুরের চালা ইউনিয়নের দিয়াবাড়ি বাজার এলাকায় পৌঁছালে লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা করে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা বহরে থাকা তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
পরে প্রচারণা শেষ না করেই বহরে থাকা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিকল্প পথে চারিগ্রাম এলাকায় নিজের বাড়িতে যান মঈনুল ইসলাম খান শান্ত।
বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, ‘হরিরামপুরের ঝিটকা ও মাচাইনসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় গণসংযোগ করার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা ও ভাঙচুরের কারণে তা করা যায়নি। দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমার বহরে হামলার পরিকল্পনা ছিল। প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আমি ফিরে আসি। আমি ফিরে আসার পর হরিরামপুরে আমার চারজন কর্মীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এক কর্মীর দোকানে লুটপাট চালানো হয়েছে।’
এ দিকে মঈনুল ইসলাম খানসহ তাঁর ৩৩ জন কর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরো ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। সন্ধ্যায় মামলাটি করেন স্থানীয় চালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য কছের শেখ।
মামলায় কছের শেখ উল্লেখ করেন, আসামিরা অতর্কিত চালা বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা করে চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। চাপাতি দিয়ে তাঁর পায়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়।
মামলার বিষয়ে মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, কারো প্রচার কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। আওয়ামী লীগের লোকজনই আমার গাড়ি বহরে হামলা করে ভাঙচুর চালাল। আবার আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হলো।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, একটি দলের নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা ও ভাঙচুর ছাড়াও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।