কুলিয়ারচরে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ নূরুল মিল্লাতকে প্রধান করে ৫৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪৫০ জন বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে একটি মামলা করা হয়েছে।
পুলিশের কাজে বাধা, হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগে কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল থেকে আটক নাজির (২৪), কাজল (২৬), সাগর (১৮), কালাম (৪০), শামীম (১৯) ও আবদুল্লাহ গালিবকে (২০) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকেলে কুলিয়ারচর পৌর শহরের গাইলকাটা নামক এলাকায় পুলিশ-বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ৭০টি শটগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) নির্বাচনী এলাকার বিএনপিদলীয় প্রার্থী মো. শরীফুল আলমসহ কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলে দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. শফিকুল ইসলাম ও নাজমুলসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওই ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তাদের দলীয় প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল আলম ওইদিন বিকেলে নিজবাড়ি কুলিয়ারচর পৌর এলাকার বেতিয়ারকান্দি থেকে গণসংযোগে বের হন। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে গাইলকাটা রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় পুলিশের একটি দল পেছন দিক থেকে নেতাকর্মীদের ওপর শটগানের গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে শরীফুল আলমসহ কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হন।
পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপি প্রার্থী মো. শরীফুল আলম তাৎক্ষণিক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১২ ডিসেম্বর উসমানপুর চৌমুরী বাজারে পথসভায় পুলিশের হামলায় আমি ও আমার বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হই। কিছুটা সুস্থ হয়ে দেড় সপ্তাহ পর সোমবার নেতাকর্মীদের নিয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করে থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় আমরা বাড়ি ফেরার পথে পেছন থেকে পুলিশ অতর্কিতে গুলি চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে শরীফুল দাবি করে বলেন, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পুলিশ বারবার তাঁর ওপর হামলা করছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, পুলিশ যত হামলাই করুক, জীবন বাজি রেখেই ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাঠে থাকবেন। আওয়ামী লীগ পুলিশ দিয়ে শরীফুল আলম ও তাঁর নেতাকর্মীদের স্তব্ধ করতে পারবে না, ইনশা আল্লাহ।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নান্নু মোল্লা জানান, নূরুল মিল্লাদের নেতৃত্বে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার বিএনপি নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বাজারে যাচ্ছিল, যা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৭০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয়। ওই ঘটনায় বিএনপির ৫০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে তিনি এ সময় স্বীকার করেন।