কালীগঞ্জে বিএনপির প্রার্থীর স্ত্রীর ওপর আবার হামলা
গাজীপুর-৫ আসনের (কালীগঞ্জ) কারাবন্দি বিএনপির প্রার্থী এ কে এম ফজলুল হক মিলনের স্ত্রী শম্পা হকের ওপর চারদিনের ব্যবধানে আজ সোমবার ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা তাঁর বহরের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে। গাড়ি থেকে যুবদল ও ছাত্রদলের সাত কর্মীকে টেনে-হেঁচড়ে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পারভীন আক্তার জানান, দুপুরে থানায় বৈধ অস্ত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় কালীগঞ্জ শহরের ব্যাংকের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শম্পা হককে অচেতন অবস্থায় পুলিশ প্রহরায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চারদিনের ব্যবধানে এটি তাঁর ওপর দ্বিতীয় হামলার ঘটনা।
গত ১৩ ডিসেম্বর কালীগঞ্জে নির্বাচনী সভা থেকে ফজলুল হক মিলনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর তাঁর স্ত্রী শম্পা হক স্বামীর হয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
অ্যাডভোকেট পারভীন আক্তার জানান, শম্পা হক সোমবার দুপুরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনী প্রচারণার শিডিউল ও গাড়ির তালিকা জমা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তালিকার কপি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কালীগঞ্জের ইউএনও এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দেওয়ার জন্য বলেন। ওই তালিকা ও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বৈধ অস্ত্র কালীগঞ্জ থানায় জমা দিতে গাজীপুর থেকে কালীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন। বিকেলে নাগরী ইউনিয়নের পাঞ্জোরা এলাকায় তাদের গণসংযোগের কথা ছিল। দুপুর দেড়টায় কালীগঞ্জ বাজারের ব্যাংকের মোড় এলাকায় পৌঁছালে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি অমিত ও উপজেলা যুবলীগ নেতা আরমানের নেতৃত্বে দুই শতাধিক যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কাঠের লাঠি, হকিস্টিক ও রড নিয়ে গাড়ির বহরে হামলা চালায়। তারা গাড়ির গ্লাস ভেঙে যুবদল ও ছাত্রদলের সাত কর্মীকে টেনেহেচঁড়ে বের করে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বেধড়ক মারধর করে। গাড়ির কাঁচ বিদ্ধ হয়ে শম্পা হক আহত হন। এ সময় তাদের গাড়ির বহর কয়েক গজ দূরের থানায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে থানার গেটের সামনে মারমুখী স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় শম্পা হক অচেতন হয়ে পড়েন। কালীগঞ্জ থানার ওসি প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুলিশ প্রহরায় তাঁকে ঢাকায় পৌঁছে দেন। পরে তাঁকে ঢাকায় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার নাগরী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল শেখ ও একই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জামান মিয়াকে পিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ করেছে হামলাকারীরা। বাকিদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
সবুজ জানান, গত শুক্রবারও প্রচারণা চালানোর সময় মীরের বাজার এলাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। আবার সোমবারও শম্পা হকের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটল। হামলায় ছাত্রদল ও যুবদলের সাত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে বিএনপির ওপর লেলিয়ে দিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু বক্কর দাবি করেন, থানায় অস্ত্র জমা দিতে আসার সময় শম্পা হকের গাড়িতে কে বা কারা ধাওয়া দিলে তিনি থানায় আশ্রয় নেন। পরে অস্ত্র জমা দিয়ে চলে গেছেন। কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।