‘যারা বোমা হামলা করে মানুষ মারছে, তাদের পেলে দেহ থেকে হাত বিচ্ছিন্ন’ করে ফেলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মনিরুজ্জামান। এসব ঘটনার দায়-দায়িত্ব প্রশাসন নেবে বলেও জানান তিনি। 

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া মডেল থানার আয়োজনে শহরতলীর ত্রিমোহনীতে সাধারণ মানুষের সাথে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় মনিরুজ্জামান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক, খুলনা বিভাগীয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একটি রেল দুর্যোগ ঘটিয়ে বা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে যারা হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়, যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে দেয় না, যারা দোকানপাট বন্ধ রাখতে চায়, সেই সব নরপিশাচদের জায়গা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। বলে রাখি, আগেও কোনোদিন হয়নি, আগামী দিনেও হবে না। আমরা যেকোনোভাবে হোক, একটা কথা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, রাষ্ট্রীয় শক্তি ও জনগণের শক্তি  যদি এক হয়, তবে ওই ষড়যন্ত্রকারীরা পালানোর পথ পাবে না।’ 

‘সবশেষে যে কথাটা আমি বলতে চাই, এই ধরনের বোমা যারা মারে, তাদের এই হাতটি দেহ থেকে ছিন্ন করে ফেলেন, তার জন্য যদি কিছু আসে দায় দায়িত্ব আমরা… এখানে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় আছেন, আমরা আছি, আমরা সবাই মিলে সেই দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করব। আমরা এই দেশে মানুষকে যারা পুড়িয়ে মারে, মানুষকে যারা মারে, তারা আর যাই হোক তারা মানুষ নয়, নরপিশাচ। তারা আমাদের বন্ধু নয়, তারা আমাদের ভালো চায় না। আর আমরা একটা লোকও ঘরে বসে থাকতে রাজি নই। আপনাদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের সচেতন হবে।’ বলেন ডিআইজি। 

এ সময় পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রতি বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে দেশের কল্যাণে কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ বলেন, ‘কর্মহীনভাবে একটা দিন চলে গেলে সেটা নিজের ও দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। ফলে যারা দেশে সন্ত্রাস ও পেট্রলবোমা মারছে, এসব ঘৃণ্য নাশকতাকারীদের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে আমরা সবাই একসাথে কাজ করে যাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টা সতর্ক থেকে আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি। দয়া করে আপনারা এসব সন্ত্রাসী নাশকতাকারীকে ধরেন, ধরিয়ে দিন অথবা আমাদের তথ্য দিন।’

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদুর রহমান শহীদ, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম। 

কুষ্টিয়া বিজিবির সেক্টর কমান্ডার জাভেদ সুলতান, ৩২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আবুল কালাম আজাদ, র‌্যাব-১২ কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আলী হায়দার, খুলনা বিভাগের দুজন অতিরিক্ত ডিআইজিসহ আশপাশের কয়েক জেলার পুলিশ সুপার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
 
পরে কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলায় এ রকম আরো আটটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশের ডিআইজি।