এফডিসিতে আমজাদ হোসেনের জানাজা সম্পন্ন
বরেণ্য নির্মাতা আমজাদ হোসেনের জানাজা এফডিসিতে আজ দুপুরে সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় তাঁর পরিবারের সদস্য ও চলচ্চিত্রের শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ সকাল ১১টার দিকে আমজাদ হোসেনের মরদেহ প্রথমে শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এই গুণী নির্মাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।। এরপর তাঁর মরদেহ এটিএন বাংলায়, সেখান থেকে এফডিসিতে এবং এরপর চ্যানেল আইয়ের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
তিন জায়গায় জানাজা শেষে বর্তমানে আমজাদ হোসেনের নিজ জেলা জামালপুরে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমজাদ হোসেনের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী জামালপুরে তাঁকে সমাহিত করা হবে। এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা ও ডিরেক্টস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক।
এস এ হক অলিক বলেন, ‘আগামীকাল রোববার সকাল ১০টায় জামালপুর হাইস্কুল মাঠে আমজাদ হোসেনের শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জামালপুর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।’
বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে মারা যান। সাতদিন বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মর্গে থাকার পর নন্দিত এই পরিচালকের মরদেহে ঢাকায় আসে গতকাল সন্ধ্যায়।
গত ১৮ নভেম্বর রোববার সকাল ৯টার দিকে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার তাঁকে (আমজাদ হোসেন) বিছানার নিচে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কখন তিনি অচেতন হয়েছেন, তা আঁচ করতে পারেননি সুরাইয়া আক্তার। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ইমপালস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, রোববার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় আমজাদ হোসেনের। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ নভেম্বর রাত আড়াইটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হার্টবিট, ব্লাডপ্রেশার এবং কিডনি ইনফেকশনের জন্য ডায়ালাইসিস চলেছিল বলে জানান তাঁর ছেলে সোহেল আরমান।
আমজাদ হোসেন অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র শুরু করেন তিনি। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা শুরু করেন।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ছবিটি পরিচালনা করেন ১৯৬৭ সালে। পরিচালক হিসেবে ‘নয়নমণি’ (১৯৭৬), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।