ঢাকা- ৯ আসন : সরব আওয়ামী লীগ, নীরব বিএনপি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি ১০ দিন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। এরই মাঝে গত ১০ ডিসেম্বর প্রর্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্ধ দেন নির্বাচন কমিশন। এরপরই শুরও হয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর সারা দেশে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে প্রচার প্রচারণা চালালেও বাধার অভিযোগ করছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা।
এর ব্যতিক্রম নয় ঢাকা-৯ আসনও। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রতীকে লড়বেন মহিলা দলের সভানেত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ন্ত্রীর আফরোজা আব্বাস। অন্যদিকে নৌকা প্রতীকে লড়বেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।
ঢাকা-৯ আসনের সব জায়গাতে দেখা মিলছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার প্রচারণা, পোস্টার, ব্যানার। কিন্তু ধানের শীষের প্রার্থীর বেলায় উল্টোটা। বাসাবো, সবুজ বাগ, মাদারটেক কোথাও চোখে পড়েনি বিএনপি প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের পোস্টার, ব্যানার। তবে এরই মাঝে তিনি দুদিন নির্বাচনী প্রচারণা বের হয়েছেন বাসাবো বোদ্ধ মন্দির ও মাদারটেক এলাকায়।
গত ১২ ডিসেম্বর প্রথম বারের মতো প্রচারণায় বের হয়ে হামলার শিকার হন আব্বাসপত্নী। বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির ও মাদারটেক চৌরাস্তায় তার ওপর হামলা করা হয়। হামলার বিষয়ে আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে হত্যার জন্যই এই হামলা করা হয়েছিল। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আমি এবং আমার সামনে থাকা কর্মীদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় একাত্তর টেলিভিশন ও সময় টেলিভিশনের ক্যামেরা ভাঙচুর করে। আমাকে তারা প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার গাড়ির চালক রশীদ মারাত্মকভাবে আহত হয়। তার রানে কোপ লাগে।’
তবে ভিন্ন কথা বলেছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। তারা বলছে, আফরোজা আব্বাসের নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের কেউ কোনো প্রকার বাধা দেয়নি, হামলাও করেনি। সাইফুল ইসলাম নামে সাবের হোসেন চৌধুরীর এক সমর্থক বলেন, ১২ ডিসেম্বর মাদারটেক এলাকায় আমরা নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। ওই সময় সেখানে ধানের শীষের পক্ষেও প্রচার, প্রচারণা চলছিল। আমরা আমাদের প্রচার চালেয়েছি তারা তাদেরটা করেছে। এদিকে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-৯ আসনের সব জায়গাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পোস্টার। কিন্তু কোথাও ধানের শীষের পক্ষে কোনো পোস্টার দেখা যায়নি। বাসাবো টেম্পু স্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সধারণ সম্পাদক দেওয়ান তুহিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আমরা কোথাও ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালাতে গেলেইআমাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। কোথাও আমাদের প্রার্থীর পক্ষে পোস্টারও লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। বাসাবো, মাদারটেক, কমলাপুর, সবুজবাগ কোথাও আমাদের প্রচপারণা চালাতে গেলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে এলাকার লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা অনেকটা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আগে কখনো এমন হয়নি আমাদের এলাকায়। সব সময় নির্বাচন ছিল এখানে উৎসবের মতো। কিন্তু এবার একটা ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে সবার মাঝে। অন্য যেকোনো নির্বাচনে এ এলাকায় সব প্রার্থীর ব্যানার, পোস্টারে চেয়ে যেত। কিন্তু এবার নির্দিষ্ট একটি দলের পোস্টার আর প্রচারপত্রই চোখে পড়ছে। উত্তর বাসাবোর আবদুল খালেক বলেন, আমি এখানের স্থায়ী বাসিন্দা। সব নির্বাচনই দেখেছি। কিন্তু এবারে নির্বাচনটা ভিন্ন। এক পক্ষের প্রচার প্রচারণা থাকলেও অন্য পক্ষের তেমন কোনো প্রচার প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না। এমনটা কেন সেটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো তাদের নির্বাচনী কৌশল হতে পারে, না হলে ভিন্ন কিছু। তবে ভোটের সময় সব প্রার্থীর প্রচার প্রচারণা দেখলে ভালো লাগত সব সময়। ভোট তো সবার কাছেই একটা উৎসব।