নওগাঁয় বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর
নওগাঁ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর প্রচার কাজে বাধা, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
এর প্রতিবাদে আজ সোমবার দুপুরে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন পারভেজ আরেফিনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার জন্য গতকাল রাত ৩টার দিকে চেরাগপুর ইউনিয়নের বয়ড়া গ্রামে বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাঙচুর করা হয়। পরে ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এ ছাড়া এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ওই গ্রামের বাসিন্দা বিএনপির কর্মী আতোয়ার রহমানের ধানের পালায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়টি আমরা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে জানিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’
আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘আগের নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নে আমাদের প্রার্থীর গণসংযোগ কর্মসূচি রয়েছে। এই কর্মসূচিকে বানচাল করার উদ্দেশ্যেই নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়েছে।’
আব্দুস সাত্তার আরো বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে বাড়ির দরজা ভেঙে রাইগা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোজ্জাম্মেল হক শরিফুল ও সাধারণ সম্পাদক আলী মোর্তুজা বেলালকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ছাড়া নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য গভীর রাতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের অনেকেই গ্রেপ্তার-হয়রানি এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন।’
বিএনপির প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার প্রচারণা শুরুর পর থেকেই প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের প্রচারণায় বাধা দিয়ে যাচ্ছে। গতকাল বিকেলে উপজেলার পাঠাকাঠা বাজারে নির্বাচনী গণসংযোগ চালানোর সময় আমাদের এক কর্মীকে মারধর করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু নেতাকর্মীরা। পোস্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে, দিনের বেলা ধানের শীষের পোস্টার টানালে রাতের বেলায়ই সেগুলো নাই হয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে বারবার অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন ও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
বিএনপির প্রার্থী হয়রানি করা প্রসঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের ব্যাপারে মুঠোফোনে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই করে দেখা হচ্ছে। শুধু এই বিষয় নয়, প্রচার-প্রচারণার কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে আগের একটি মামলায় বিএনপির ওই নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
সাজ্জাদ হোসেন আরো বলেন, ‘পুলিশ তার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। কেউ অভিযুক্ত হলে পুলিশ তাকে আটক অথবা গ্রেপ্তার করবেই। সেটি বিএনপির নেতাকর্মী হোক আর যেই হোক। অযথা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।’