শেরপুরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ২২
শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২২ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদকসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে নকলা উপজেলার টালকি ইউনিয়নের রামেরকান্দি মোড় ও নারায়ণখোলা এলাকায় ওইসব সংঘর্ষ হয়। উভয় দলের কর্মী-সমর্থকই পরস্পরের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল সন্ধ্যার দিকে নকলার রামেরকান্দি বাজার মোড়ে শেরপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফাহিম চৌধুরীর একটি নির্বাচনী কার্যালয় খোলা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মেগা মিয়া, যুবলীগের সম্পাদক রুবেল সরকার, টালকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল, স্থানীয় বিএনপি নেতা জহুরুল হক কেশুসহ উভয়দলের বেশ কয়েকজন সংঘর্ষে আহত হন। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে মেগা মিয়া, রুবেল সরকারসহ ছয়জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ওই ঘটনার পরপরই চর অষ্টাধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা বাজারে ধানের শীষ প্রার্থী ফাহিম চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচনী সভা শুরু করতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করেন। এতে দুইপক্ষে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সে সময় বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ওই সংঘর্ষের জেরে নকলা বাজার এলাকার ইসিবপুরে বিএনপি কর্মী দুলাল মিয়ার বাসায় আওয়ামী লীগের একটি মিছিল থেকে হামলা ও তাঁর বাড়ির সামনে রাখা দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেফাজ উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর, বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন।’
এসব ঘটনার জন্য পুলিশকেও দায়ী করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে, সাথে পুলিশ আমাদের কর্মীদের ওপর টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে। আমরা সবাই এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
অপরদিকে পাল্টা অভিযোগ তুলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘টালকি রামেরকান্দি বাজারে বিএনপির লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে। সেখানে আমাদের ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। বিএনপি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আমাদের মাঠের পরিস্থিতি ভালো, আমরা এখানে সংঘাত চাই না।’
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে বলেও জানান তিনি।