৫০ টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে পারল না সামিউল
নেত্রকোনায় ৫০ টাকার জন্য বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি এক শিক্ষার্থীকে। তার নাম সামিউল। গতকাল শনিবার পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয় সে।
সামিউল বারহাট্টা উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের হারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করার ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী মামুন বিষয়টির ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন।
সামিউল হারুলিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক দুলহা মিয়ার ছেলে। আর্থিক অনটনের মাঝেই দুলহা মিয়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর ছেলের লেখাপড়ার খরচ। এ বছর বার্ষিক পরীক্ষার ফির সব টাকা দিতে পারেননি তিনি। ৫০ টাকা বাকি থেকে যায়। এই টাকা পরে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। টাকা বাকি থাকায় প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি সামিউলকে। প্রবেশপত্র ছাড়াই আটটি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। তবে গতকাল শনিবার সকালে পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করলে টাকা পরিশোধ করে প্রবেশপত্র নিয়ে আসার কথা বলেন দায়িত্বরত শিক্ষক সুরমা আক্তার। এর ফলে সামিউল গণিত পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
এদিকে সামিউলের বাবা তাঁর দুই সন্তানের পরীক্ষার ফি বাবদ এক হাজার ৮০০ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু টাকা না থাকায় আরো ৫০ টাকা দিতে পারেননি। আর এজন্য সামিউলকে পরীক্ষা দিতে দেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী মামুনকে জানালে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি এবং কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
এই বিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে এলাকার লোকজন।
এ ব্যাপারে ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সামিউল যেন পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে।’