শেষ দিনের আপিলেও ভোট-ভাগ্য খুলল না যাদের
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের তৃতীয় ও শেষ দিনের মতো শুনানি চলছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ আপিল শুনানি শুরু হয়। আজ শনিবার সকাল ১০টার কিছু পর থেকে আপিল আবেদনের ওপর শুনানি ও নিষ্পত্তি হচ্ছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ১১ তলায় এ লক্ষ্যে গঠিত এজলাসে আপিল আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ আপিল শুনানি করছেন। ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিচারকদের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
যাঁদের মনোনয়নপত্র অবৈধই রয়ে গেছে তাঁরা হলেন- বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন), বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান (ঢাকা-২); কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল ৪ ও ৮ আসন); মো. আবু বকর সিদ্দিক (শেরপুর-৩); মো. এরশাদুর রহমান ( নেত্রকোনা-১); কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদ (ময়মনসিংহ-৪); আলমগীর কবির (ময়মনসিংহ-৯); এম এ রাজ্জাক খান (ময়মনসিংহ-৭); মো. জাকির হোসেন (নেত্রকোনা-৫); নাজনীন আলম (ময়মনসিংহ-৩); শফী আহমেদ (নেত্রকোনা-৪); মো. মাসুম বিল্লাহ (জামালপুর-৩); ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী (জামালপুর-৫); এস এম আশরাফুল হক (ময়মনসিংহ-১১); মো. সামীউল আলম (ময়মনসিংহ-৩)।
আপিল করেও যারা ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে পারেননি তাদের মধ্যে আরো রয়েছেন- আহসানুল আলম কিশোর (কুমিল্লা-৩); মো. রুহুল আমিন চৌধুরী (কুমিল্লা-১০); মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (চট্টগ্রাম-৫); শাহ মফিজ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২); মো. মোরশেদ সিদ্দিকী (চট্টগ্রাম-৯); মাওলানা আবু সাইদ (চট্টগ্রাম-১১); আনোয়ারুল কবীর (রিন্টু আনোয়ার) (ফেনী-৩); আফতাব উদ্দিন (নোয়াখালী-৩); জামাল রানা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩); ইরফানুল হক সরকার (কুমিল্লা-৪); মো. আবু বকর ছিদ্দিক (নোয়াখালী-৩); ডনাই প্রু নেলী (বান্দরবান); মো. ওমর ইউসুফ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩); মো. আলী আলম (সিরাজগঞ্জ-৫); মুহাদ্দিস শহিদুল ইসলাম ইনসাফি (যশোর-২); মো. মশিউর রহমান (ঝিনাইদহ-২)।
আজ আপিলের শেষ দিনেও আরো যাদের মনোনয়ন বৈধতা পায়নি তাঁরা হলেন- এ বি এম আহসানুল হক (যশোর-২); মোহাম্মদ ইউসুফ (কিশোরগঞ্জ-১); মো. মাসুদুর রহমান খোকন (ঢাকা-৭); মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন (ঢাকা-৪); লিয়াকত হোসেন খোকা (নারায়ণগঞ্জ-৩); মো. হারুন অর রশিদ (ফরিদপুর-১); সৈয়দ মঈন উদ্দিন (রিপন) (ঢাকা-২); মো. কামরুল ইসলাম (ফরিদপুর- ১); মো. আব্দুর রহিম (ঢাকা- ১৫); ফেরদুছ আক্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪); এম এয়াকুব আলী (চট্টগ্রাম-১২); মো. রুহুল আমিন (কুমিল্লা-৪); মো. খায়রুল হাসান (চাঁদপুর-২); আবুল বাশার চৌধুরী (ফেনী-১); সাইমুম সরওয়ার (কক্সবাজার-৩); কাজী জুম্মুন বসরী (কুমিল্লা-৩); মো. হারুন অর রশিদ (চাঁদপুর-৪), মোহাম্মদ শফিউল আলম (কক্সবাজার -২); রবিউল ইসলাম (কুমিল্লা -২); মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী (কুমিল্লা -৪); মো. আব্দুল হান্নান (চাঁদপুর- ৪); নিজাম উদ্দিন হানাফী (ফেনী -২); মোহাম্মদ আবুল কাশেম (চট্টগ্রাম- ৩); মো. আবু হানিফ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া -৩); মোহাম্মদ আবু তালেব (চট্টগ্রাম -১২) ও মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (মেহেরপুর- ১)।
গত বৃহস্পতিবার থেকে এই আপিল শুনানি শুরু হয়। এর মধ্যে প্রথম দিন ১৬০টি আবেদনের ওপর শুনানি করে ৮০ জনের প্রার্থিতাকে বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর গতকাল শুক্রবার ১৫০টি আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এর মধ্যে ৭৮ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। পাশাপাশি এদিন ৬৫ জনের প্রার্থিতা বাতিল এবং সাতজনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে নির্বাচন কমিশন। দুদিনে মোট ১৫৮ জন তাদের মনোনয়ন ফিরে পান। এতে ভোটের মাঠে তাদের লড়াইয়ের আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকল না।
মনোনয়নপত্র বাছাইকালে দুই হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ ও ৭৮৬টি অবৈধ বলে ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এগুলোর মধ্যে বিএনপির ১৪১টি, আওয়ামী লীগের তিনটি এবং জাতীয় পার্টির ৩৮টি মনোনয়নপত্র রয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ৩৮৪টি। এর মধ্যে আপিলের আবেদন এসেছে ৫৪৩টি।
৩৯টি দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে এবার ৩০০ সংসদীয় আসনে তিন হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা পড়ে মোট দুই হাজার ৫৬৭টি, আর স্বতন্ত্র ছিল ৪৯৮টি।
আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।