তাবলিগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, বিমানবন্দর সড়কে ভয়াবহ যানজট
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে আজ সকালে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে রাজধানীর মহাখালী থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে বিমানবন্দর সংযোগ সড়কে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ ও তাঁর প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেছেন আবদুল্লাহপুর জোনের ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদ।
পুলিশ জানিয়েছে, এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই কারণে উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছু পরে পুলিশ এসে রাস্তার একদিক থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেয়। এতে সড়কের একটি পথে যান চলাচল শুরু হয়। কেউ যান চলাচলে বাধা দিচ্ছে না।
ইজতেমার একটি সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরেই মাওলানা সাদের প্রতিপক্ষ মাওলানা জুবায়েরের সমর্থকরা টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমার ময়দানে অবস্থান নেন। আজ সকালে মাওলানা সাদের সমর্থকরা ময়দানে প্রবেশ করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হওয়া যাবে না। কোনো ওয়াজ, মাহফিল, ধর্মীয় সমাবেশও করা যাবে না। সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই দুই পক্ষ ইজতেমা ময়দানে জড়ো হয়।
মাওলানা সাদের সমর্থকরা জানায়, আজ থেকে ময়দানে তাদের পাঁচদিনের জোড় শুরু হওয়ার কথা। একে কেন্দ্র করেই তারা সেখানে এসেছে। হাজার হাজার মাওলানা সাদ সমর্থক ময়দানের প্রতিটি গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে দুই পক্ষ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। মুসল্লিরা আশকোনা, কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আছেন।
এ দিকে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সাঁজোয়া যান ও জলকামান প্রস্তুত রয়েছে সেখানে।
গত বছর বিশ্ব ইজতেমার সময় থেকেই দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে থাকে। এর জের ধরে গত এপ্রিলে তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে একপক্ষ আরেকপক্ষকে আটকেও রাখে। তখন সরকার দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করতে বৈঠকও করে। টঙ্গীতে বিশ্বের বড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে তাবলিগ জামায়াতের বিবদমান দুই পক্ষের সভা হয়। সেই সভা থেকে ডিসেম্বর মাসের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। আগামী জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা হওয়ার কথা ছিল। সেই সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), ধর্ম সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।