মোবাইল ফোনের জন্য জীবন গেল কিশোরের!
পাবনা সদর উপজেলায় নিখোঁজের চার দিন পর আশিক মাহমুদ অনি বাবু (১৪) নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দুবলিয়া গ্রামের দুবলিয়া হাই স্কুলের পাশে একটি হলুদ ক্ষেত থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আশিক গ্রামের মো. রবিউল ইসলাম প্রামাণিকের মেজ ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার দুবলিয়া বাজার থেকে নিখোঁজ হয় আশিক। ওই দিন সন্ধ্যায় বাজারে নিজেদের টিনের দোকানে গেলে ছেলেকে বাড়ি যেতে বলেন রবিউল। দোকান থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি আশিক। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে পরের দিন মঙ্গলবার আতাইকুলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১০৩৬/১৮, তারিখ-২৭/১১/২০১৮) করেন রবিউল। এর মাঝে আশিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পরে আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে দুবলিয়া হাই স্কুলের দক্ষিণ পাশের একটি হলুদ ক্ষেতে শ্রমিকরা কাজ করার সময় মাটির নিচ থেকে একটি হাত বেরিয়ে আসে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমান এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা একটি মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহটি আশিকের বলে শনাক্ত করে তার পরিবার।
পাবনা সদর থানার দুবলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোরঞ্জন রায় জানান, দুবলিয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আশিক এবারে জেএসসি পরীক্ষা শেষ করেছে। সে দুটি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। একটির দাম সাড়ে আট হাজার টাকা, অন্যটির দাম আট হাজার টাকা। এ ছাড়া কয়েক দিন আগে আশিকের জমানো সাড়ে চার হাজার টাকা হারিয়ে যায়।
মোবাইল ও টাকা-পয়সা বিষয়ে বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে সৃষ্ট কলহের জের ধরেই আশিককে হত্যার পর তার লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয় বলে ধারণা পুলিশের। এ ছাড়া প্রেমঘটিত বিষয় থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে যে কারণেই ঘটুক এর সঙ্গে তার বন্ধু-বান্ধবদের সংযোগ আছে বলে দাবি করেন মনোরঞ্জন রায়।
ঘটনার পর থেকেই অনির সন্দেহভাজন বন্ধুরা পলাতক। দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দোষীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন।
মোবাইল ফোনই আশিকের কাল হলো বলে দাবি স্থানীয়দের। এ ঘটনায় তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ছাড়াও এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে।