সাজা স্থগিত প্রসঙ্গে হাইকোর্টের একক বেঞ্চে ভিন্ন রায়
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা স্থগিতের ক্ষমতা হাইকোর্টের রয়েছে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ। আর সাজা স্থগিত হলেই ওই ব্যক্তি নির্বাচন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোহাম্মদ রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চ সাজা ও দণ্ড স্থগিতের একটি আবেদন গ্রহণ করে এসব আদেশ দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের আরেকটি দ্বৈত বেঞ্চ সাজা ও দণ্ড স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দেন।
অবৈধ সম্পদ ও সম্পদের তথ্য না দেওয়ার মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত যশোর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানাকে ছয় বছরের সাজা দেন। ৩০ জুলাই সেই সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন উচ্চ আদালত। শুনানি শেষে তাঁর দণ্ড ও সাজা স্থগিত করে বিচারপতি মোহাম্মদ রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চ। এর ফলে তাঁর নির্বাচন করতে বাধা নেই বলে জানান তাঁর আইনজীবী।
সাবিরার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সিক্সটি সিক্স, টু ডিতে কিন্তু বলা নেই প্রথম দোষী সাব্যস্ত হলেই তিনি অযোগ্য হয়ে যাবেন। সেখানে আইনের যে ব্যাখ্যাটা আমরা দিয়েছি এবং বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে আমরা যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, তাতে বলেছি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে দোষী বা দণ্ডিত বলার অবকাশ নেই।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ সব কিছুর বিচার বিশ্লেষণ করে আমাদের আবেদনটি আজ গ্রহণ করেছেন আদালত।’
হাইকোর্টের দুইটি বেঞ্চে দুই ধরনের আদেশ আসায় এখন অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বেলায় কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, ‘একজনের সাথে আরেকজনের আদেশ মিলানো ঠিক হবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চের আদেশ আরেকটি বেঞ্চের ওপর বাইন্ডিং না। এটি ইন্ডিপেনডেন্ট জাজমেন্ট।’
একই বিষয়ে হাইকোর্টের দুইটি বেঞ্চ দুই ধরনের জাজমেন্ট দিলো। এখন নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনটাকে আমলে নেবে? এ প্রশ্নের জবাবে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পজিটিভ অর্ডার যার পক্ষে পাবেন সে আদেশ তো মানতে বাধ্য নির্বাচন কমিশন।’
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশটি ঠিক হয়েছে কিনা তা আপিলেই সমাধান হবে। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথাও জানান তিনি।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘একক একজন বিচারক (সিঙ্গেল বেঞ্চ) যদি এরকম অর্ডার দিয়ে থাকেন যে স্থগিত বা স্টে হলে তারা নির্বাচন করতে পারবেন তাহলে তো সে ডিভিশন বেঞ্চের বিপরীতধর্মী আদেশ হলো। এ আদেশের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই আমরা আপিল বিভাগ করব।’
গত মঙ্গলবার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সাজা ও দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।