মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা দাখিলের শেষ দিন আজ বুধবার। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন না।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও তা পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে। এবারই প্রথমবারের মতো সরাসরি নির্বাচন অফিসে না গিয়েও অনলাইন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে তা জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা।
তবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও প্রার্থীরা এখনই নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। এজন্য তাঁদের আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ওইদিন নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। তারপর প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবেন, ভোট চাইতে পারবেন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আগামীকালই (আজ বুধবার) শেষ দিন। এরপর কোনো প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে পারবেন না। জমা দিলেও তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে কমিশন নজরে নিয়ে আসবে। সুতরাং নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন করতে প্রার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে নির্দেশনা জারি করে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শোডাউন করতে করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়া যাবে না। একই সাথে কোনো প্রার্থী পাঁচ থেকে সাতজনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে পাঁচজনের বেশি লোক রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে ভিড় করতে পারবেন না। নির্বাচন সামনে রেখে কোনো প্রার্থী জনসভা, মিছিল, মিটিং করতে পারবেন না। কেবল পথসভা করতে পারবেন। প্রার্থীদের পোস্টার হতে হবে সাদাকালো। প্রতিটি পোস্টারের নিচে পোস্টারের সংখ্যা, প্রেসের ঠিকানা, প্রকাশকের নাম দেওয়া বাধ্যতামূলক। না হলে সেসব পোস্টার নির্বাচন কমিশনের কাছে অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার নন- এমন কাউকে পোলিং এজেন্ট করা যাবে না। নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে পোলিং এজেন্টদের দুই কপি ছবি এবং নামের তালিকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। প্রার্থী হলে পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুকূলে এ টাকা জমা দিতে হবে।
হলফনামায় যা যা দিতে হবে
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় হলফনামা আকারে আটটি তথ্য দিতে হবে। ব্যয়ের উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্নের কপি জমা দিতে হবে। মনোনয়ন ফরমে কোনো ভুল হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। মনোনয়ন দাখিলের আগে প্রার্থীকে অবশ্যই যেকোনো তফসিলী ব্যাংকে নতুন হিসাব খুলতে হবে। নির্বাচনের সমুদয় ব্যয় এ অ্যাকাউন্ট থেকেই করতে হবে। এই অ্যাকাউন্টের নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচনের ফলের গেজেটে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং অফিসার এবং কমিশনে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত খরচের হিসাব ফল প্রকাশের সাতদিনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে।
কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। লিখিত ছাড়া কোনো এজেন্টের অভিযোগ আমলে নেবে না কমিশন। কোনো ভোটার ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে না ফেলে বাইরে নিয়ে এলে কমিশন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া অন্য কোনোভাবে কোনো ব্যালট পেপার বাইরে চলে এলে ওই ব্যালট পেপার যে প্রদর্শন করবে কমিশন তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে।