নওগাঁ-৪ আসন পুনরুদ্ধার করতে চান বিএনপির ডা. টিপু
নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হতে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হতে পারলে ২০০৮ সালে হারানো নওগাঁ-৪ আসনটি বিপুল ভোটের ব্যবধানে পুনরুদ্ধার করতে চান তিনি।
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নওগাঁ-৪ আসনটি ছিল বিএনপির দখলে। ২০০৮ সালে আসনটি চলে যায় আওয়ামী লীগের হাতে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বিনা ভোটে জয় পান বর্তমান পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক।
ডা. ইকরামুল বারী টিপু ১৯৮৮ থেকে ১৯৮৯ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ার সময়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯১-৯২ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৪ সালে যখন মান্দা উপজেলায় বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোনো কমিটি ছিল না, সে সময় তিনি তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি হারুনুর রশিদ ও আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে এনে উপজেলা ছাত্রদলের প্রথম কমিটি গঠন করেন। ১৯৯৫ সালে তাঁর নেতৃত্বে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর উপস্থিতিতে যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়।
ডা. ইকরামুল বারী টিপু ১৯৯৬-১৯৯৯ সালে মান্দা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরই ধারাবাহিতায় ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত মান্দা উপজেলা কমিটির সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং সুনাম ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে বিএনপি-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৭তম বিসিএস ক্যাডারের চিকিৎসক ইকরামুল বারী টিপু সরকারি চাকরি করার সময় মান্দা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়েন। পরে ২০০৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিএনপির সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে নতুন করে জীবন শুরু করেন।
ডা. ইকরামুল বারী টিপু আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন মামলায় আসামি হন। এ মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
মান্দা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ডা. ইকরামুল বারী টিপু দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতাসহ অংশগ্রহণ করে আসছেন। এ ছাড়া গত ১০ বছরে সরকারের বিভিন্ন নির্যাতন, হামলা ও মামলায় নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন তিনি।
ডা. ইকরামুল বারী টিপু বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারকরা যদি আমাকে প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ দেন, তাহলে হারানো এ আসন আমি পুনরুদ্ধার করতে পারব। দলীয় মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হয়ে আসনটি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
গত ১৩ নভেম্বর মান্দা উপজেলার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেন ডা. টিপু এবং ১৪ নভেম্বর জমা দেন। এ সময় মান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক অর্থ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মুকুল, উপজেলা তাঁতী দলের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান টুলু, বিএনপির নেতা মনসুর রহমান, আল মামুন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য প্রভাষক এমদাদুল হক, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হিল্লোলসহ মান্দা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।