হামলা ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে, বললেন রিজভী
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনে বিএনপির শোডাউন আচরণবিধির লঙ্ঘন নয়—নির্বাচন কমিশনের এ কথার সূত্র ধরে রিজভী বলেন, ‘গতকাল কমিশন বলেছে যে নয়াপল্টনে (বিএনপির) শোডাউন আচরণবিধির লঙ্ঘন নয়। তাহলে তফসিল ঘোষণার পর কোন সাহসে পুলিশ বিএনপির উচ্ছ্বাসমুখর উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে? কার নির্দেশে এই পৈশাচিক আক্রমণ চালানো হয়েছে?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তবে মানুষ বিশ্বাস করে, বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশের গুলিতে ক্ষতবিক্ষত করার নির্দেশদাতা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনিই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এই কাজটি করেছেন।’
গতকাল পুলিশই প্রথম বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মিছিলে গাড়ি উঠিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি আরো বলেন, এই গাড়িচাপায় ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ কীভাবে জনগণের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়—নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চেয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরানোর পেছনে ছাত্র ও যুবলীগের নেতারা যুক্ত—এমন দাবি করে বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘সুপরিকল্পিতভাবে হেলমেটধারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এই হেলমেটধারী কারা, তা জনগণ জানে। যারা আগুন দিয়েছে, তারা পুলিশের প্রটেকশনে এই নাশকতার কাজ করেছে, এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের ঢাকা মহানগর নেতা, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
এ ছাড়া রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘গণভবনের আশপাশের রাস্তায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভিড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আক্রমণ চালায়নি কেন? শাসকগোষ্ঠীর চোখের ইঙ্গিতেই পুলিশ নড়াচড়া করেছে বলে এ সময় অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় ও সরকারি অর্থায়নে গণভবনে আওয়ামী লীগের সাড়ে চার হাজার প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের আয়োজন সম্পূর্ণরূপে নিয়মবহির্ভূত উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নির্বাচনী আচরণবিধির ১৪(২) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন না। শেখ হাসিনার জন্য কোনো আইনই প্রযোজ্য নয়। এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার টুঁ শব্দটিও করেন না। তাঁর যেকোনো কথাই আইনের সমতুল্য বলে মনে করেন তিনি।’
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও দলীয় নেতাকর্মীদের অস্ত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারে কমিশন এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি উল্লেখ করে রিজভী আরো বলেন, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের হাতে প্রচুর পরিমাণে বৈধ-অবৈধ অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকালীন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও বৈধ অস্ত্র জমাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি হলেও নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ তোলেন রিজভী।