বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্রের চর্চা দেখতে চায় জার্মানি : রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোলজ বলেছেন, জার্মানি বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্রের চর্চা দেখতে চায়। সে জন্য একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জরুরি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের কাছে পিটার ফাহরেনহোলজ এ কথা বলেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে—এ আশাবাদ ব্যক্ত করে পিটার বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলই যেন নির্বাচনের বাইরে না থাকে। জার্মানি কখনোই সহিংস কোনো পথ বেছে নেওয়াকে গণতন্ত্রের চর্চা বলে মনে করে না। নির্বাচন অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক হওয়া দরকার। আমার মনে হয়, এটা বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য।’
আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রগতির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্ব বহন করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গত কিছু বছরে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। অবকাঠামোগত অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।’
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক—এ কামনা করে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যখন কোনো দেশ উন্নয়নের পথে থাকে, প্রত্যেক নাগরিককে তার সুফল পেতে হবে। প্রত্যেক নারী, শিশু ও পুরুষকে তার সুবিধা পেতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিকে অবশ্যই সমবায়ী হতে হবে।’
জার্মানি সব সময়ই বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি একটি। বাংলাদেশের উন্নয়নে জার্মানি সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখতে চায় উল্লেখ করে পিটার বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে জলবায়ু, জ্বালানি খাত ও সুশাসন খাতে সহায়তা করছি। আগামী বছর এ দেশের মানুষ ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট হাতে পাবে। এ পাসপোর্টগুলো একটি জার্মান প্রতিষ্ঠানই তৈরি করছে। আগামীতে আমাদের অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগের জন্য আসবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। আমরা বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অর্থও বরাদ্দ করব।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করে পিটার বলেন, ‘বাঙালি জাতির মহানায়কের স্মৃতিসৌধে এসে, তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।’ এ সময় বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি গভীর অনুরাগ প্রকাশ করেন জার্মান রাষ্ট্রদূত।
শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা শেষে বঙ্গবন্ধু ভবন পরিদর্শন করেন পিটার। সে সময় তিনি সেখানে রাখা পরিদর্শক বইতে মন্তব্য লিখেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জাতীয় নেতা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নাতি এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু এ সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন।