আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে নারী হত্যা : তদন্তে পিবিআই
ঢাকার আশুলিয়ার চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ছুঁড়ে ফেলে মেয়েকে হত্যার ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে গতকাল ঢাকা জেলা পুলিশের উত্তর গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) দায়িত্ব দেয় আশুলিয়া থানা পুলিশ। কিন্তু আজ রোববার এই তদন্তভার দেওয়া হয় পিবিআইকে।
দায়িত্ব পেয়ে আজ বিকেলেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পিবিআই কর্মকর্তারা। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন আলামত জব্দ করেন। তবে এখনো, ঘটনায় জড়িত সেই বাসটিকেও শনাক্ত করা যায়নি।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিজন কুমার দাশ বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে আকবর আলী যে স্থানটি থেকে গাড়িতে উঠেছিলেন, সেখানকার সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।’
পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান বারী নূর বলেন, ‘তদন্ত শুরুর পর আমরা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। জরিনার কললিস্ট থেকে তাঁর মোবাইল ফোনের কথোপকথনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।’
হাসান বারী নূর বলেন, ‘এজাহারে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। থানা-পুলিশ যদি আরো দায়িত্বশীল হতো, তাহলে প্রথমেই এই মামলা শনাক্ত করা সম্ভব ছিল। আমরা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির তদন্তে ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।’
এ ঘটনায় নিহত জরিনার বাবা আকবর আলী জানান, মেয়েকে হারিয়ে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এর বেশি কিছু তিনি আর বলতে পারেননি।
গত শুক্রবার রাতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের আশুলিয়ার মরাগাঙ এলাকা থেকে জরিনা খাতুন নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাস কাওলিয়া গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে।
বাবা আকবর আলী জানান, শুক্রবার সকালে তাঁরা দুজন আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় তাঁর নাতনির বাসায় বেড়াতে যান। সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে নিজ বাড়ি ফিরে যাওয়ার উদ্দেশে আশুলিয়ার ইউনিক থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসে ওঠেন বাবা ও মেয়ে। তবে বাসটি টাঙ্গাইল না গিয়ে কয়েক ঘণ্টা বিভিন্ন স্থান ঘুরে আবার আশুলিয়ার দিকে চলে আসে। পরে বাসটি আশুলিয়ার মরাগাঙ এলাকায় পৌঁছালে তাঁকে (আকবর আলী) মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে আহত অবস্থায় জরিনার বাবা ঘটনাটি টহল পুলিশকে জানালে তারা প্রায় দুই কিলোমিটার সামনে গিয়ে মহাসড়কের পাশে মেয়ে জরিনা বেগমের মরদেহ দেখতে পান।
নিহত জরিনার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জরিনার স্বামী নূর ইসলাম বাদী হয়ে বাসের চালক, চালকের সহকারীসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
পরে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।