রাজধানীতে পৃথক স্থানে ৭ মৃত্যু
রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশগুলো গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলোকে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতদের নাম- হোসেন ফারুক, মোখলেসুর রহমান, স্বপন (৩০), গোলাম মোস্তফা কামাল (৪৫), সমরেশ মধু (২৫)। বাকি দুই নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
দক্ষিণ আজমপুরে যুবকের মৃত্যু
রাজধানীর দক্ষিণখানের আজমপুর মধ্যপাড়া এলাকার আ. কাদের সরণি রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় (২৫) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আজ বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। পরে মমিন নামে এক পথচারী তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
দক্ষিণ খান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান জানান, আ. কাদের সরণি রোডের ৯৫ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলার গ্রিলে দাঁড়িয়ে চুরি করার চেষ্টা করে ওই যুবক। ওই সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যান ওই যুবক। এ কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই আসামির মৃত্যু
এদিকে, ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে মাদক মামলার এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম হোসেন ফারুক (৪০)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে অচেতন অবস্থায় ফারুককে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত ৩টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী আবু হানিফ জানান, ফালু মোহাম্মদপুর থানার মাদক মামলার আসামি ছিলেন। তাঁর বাসা মোহাম্মদপুর তোরাগ হাউজিংয়ে।
এ ছাড়া, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামি মোখলেসুর রহমানের (৪৫) মৃত্যু হয়েছে।
মৃত মোখলেসুরের ভগ্নিপতি মঙ্গল মিয়া জানান, কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ার একটি হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজা হয় মোখলেসুরের। এরপর থেকে কুমিল্লা কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। গত ৩ নভেম্বর কারাগারের ভিতর ভবন থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন তিনি। এরপর মোখলেসুরকে ওইদিনই ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
উত্তর যাত্রাবাড়ীতে যুবকের মৃত্যু
এদিকে উত্তর যাত্রাবাড়ীর ২১ নং ধলপুর এলাকার একটি বাসায় স্বপন (৩০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
স্বপন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এর সিরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি একটি কাগজের কারখানার কাজ করতেন।
নিহতের ভাই শফিক জানান, স্বপন বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গামছা দিয়ে ফাঁস দেন। এ সময় তাঁকে দেখতে পেয়ে, ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ২টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রামপুরায় বন্ধ ঘরে অর্ধগলিত লাশ
রাজধানীর পূর্ব রামপুরা হাইস্কুল গলির একটি বাসা থেকে গোলাম মোস্তফা কামাল (৪৫) নামের এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আ. বারী গতরাত ৯টার দিকে হাইস্কুল গলির ৮০/১ নম্বর চারতলা বাসার ২য় তলা থেকে দরজা ভেঙ্গে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠান।
নিহত কামালের বোন লাভলি আক্তার জানান, ব্যক্তিগত জীবনে কামাল অবিবাহিত ছিলেন। মা নুরুন্নাহারকে নিয়ে তিনি ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। এ ছাড়া বেকার ছিলেন কামাল।
গত শনিবার মা নুরুন্নাহার খিলগাঁওয়ে বোন লাভলির বাসায় যান। সেখান থেকে গতকাল বিকেলে বাসায় ফিরে আসেন তিনি। এ সময় কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দিলে রাত ৯টার দিকে কামালের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্বজনরা জানান, কামাল স্ট্রোকের রোগী ছিলেন। স্ট্রোক করে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
তেজগাঁওয়ের মেসে যুবকের ঝুলন্ত লাশ
এ ছাড়া তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পূর্ব নাখালপাড়া লিচু বাগান এলাকার ৩৩০/এফ নম্বর বাসার একটি মেস থেকে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত যুবকের নাম সমরেশ মধু (২৫)। তিনি নাভানা গ্রুপে চাকরি করতেন। সমরেশ বরিশাল আগৈলঝাড়া উপজেলার কুদালধুয়া গ্রামের অর্জুন মধুর ছেলে।
গতরাত ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তারুজ্জামান মুন্সি তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। পরে মরদেহ ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের চাচাতো ভাই উজ্জ্বল জানান, গতকাল সকাল ১১টার দিকে সমরেশকে বাসায় রেখে রুমমেটরা সবাই কাজে চলে যায়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা বাসায় ফিরে এসে তাকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
গুলশানের নির্মাণাধীন ভবনের নিচে যুবকের অর্ধগলিত লাশ
এদিকে, গুলশান ১৪০ এভিনিউ ওয়েস্টার্ন হোটেলের বিপরীতে একটি বহুতল নির্মাণাধীন ভবনের নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় (২২) এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যক্তি ওই নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিক ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের ধারণা, এক সপ্তাহ আগে তিনি ভবন থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলেন। গতকাল দুর্গন্ধ পেয়ে অন্য শ্রমিকরা নিচে এসে তাঁর অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায়। পরে তারা পুলিশ খবর দেয়। তার নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।