তফসিল নয়, ভোট পেছাতে পারে : সিইসি
বিএনপিসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দলের মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি মেনে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদা।
‘গতকাল ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তফসিল পেছানোর যে দাবি করা হয়েছে, সেটি নিয়ে ইসি কী ভাবছে আর তফসিল পেছানো হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে ইসিকে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে কি না’—আজ মঙ্গলবার সকালে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘না, তফসিল পেছানোর কোনো উপায় নেই। আমরা পেছাব না।’
‘তাঁরা বলেছেন যে ৭ নভেম্বর তাঁদের সংলাপ হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সেটা যেন আমরা আমলে নেই। আমরা আমলে নেব সেটা,’ যোগ করেন সিইসি।
সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনের ইটিআই ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিইসি। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান।
সুষ্ঠু নির্বাচন, সেনা মোতায়েন, ইভিএম বাতিল, সংলাপের ফল দেখে তফসিল ঘোষণাসহ আরো কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার মতো ঘটনা ঘটে।
পরে ঐক্যফ্রন্টের নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৭ নভেম্বর সকাল ১১টায় সংলাপের পূর্বে এবং সংলাপের ফল না জেনে নির্বাচন কমিশন যেন কোনো তফসিল ঘোষণা না করে। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পার্লামেন্টের মেয়াদ আছে। তফসিল পেছানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি বিবেচনায় রাখার কথা বলেছেন।’
এ ছাড়া ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘ইভিএম ব্যবহার দেশের জনগণ, অর্থাৎ ভোটাররা চায় না। আমরা, কোনো রাজনৈতিক দলও চায় না। আমরা বলেছি, ইভিএমে ভোট ম্যানুপুলেশনের সুযোগ আছে। ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিছু বলেনি।’
তবে আজ সকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনায় সিইসি আবারও জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্তে অটল ইসি। কে. এম. নুরুল হুদা বলেন, ‘ভোটারদের ভোটের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য ইভিএমের বিকল্প নেই। ব্যালট পেপারে নানা অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো এড়িয়ে চলার জন্য ইভিএম চালু করা হবে। ইভিএমে ভোট কারচুপি করার সুযোগ নেই।’
সিইসি আরো বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আগে আইনি জটিলতা ছিল। সেগুলো এখন কাটিয়ে উঠেছি। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেছেন। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেনকে প্রধান করে ইভিএম কমিটি করা হয়েছে।’
তবে প্রাথমিকভাবে শহর অঞ্চলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান সিইসি।