চট্টগ্রামে মাঠে নামেনি বিএনপি, রয়েসয়ে আ. লীগ
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নির্বাচনী আমেজ বইতে শুরু করেছে। নানাভাবে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। এ ছাড়া দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকে এরই মধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছেন। তবে বিএনপির কোনো প্রার্থীকে প্রচারে দেখা যায়নি। দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি এবং নির্বাচন নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের পর গণসংযোগ করবেন বলে জানালেন ২০ দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
চলতি সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনই আওয়ামী লীগ ও তার শরিক দলের দখলে। তাই ১০ বছরে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন ও সাফল্যের কথা জনগণের কাছে তুলে ধরে আসনগুলো পুনরুদ্ধারের আশা দলটির। অন্যদিকে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে বিএনপি। মাঠে আওয়ামী লীগ থাকলেও দেখা নেই বিএনপির।
তা ছাড়া সম্ভাব্য বেশিরভাগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও অনুকূল পরিবেশ সাপেক্ষে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বলে জানায় দলটি থেকে টিকেট প্রত্যাশীরা।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এম ফজলুল হক বলেন, ‘বিএনপির নেতৃবৃন্দ যদি আমার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেন বা মনোনয়ন সুনিশ্চিত করেন, তবে আমরা অনেক অনেক ভোটে জিতব।’
হাটহাজারীতে নিজেকে বিএনপির প্রথম নারী প্রার্থী হিসেবে জানিয়ে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বলেন, ‘আমার দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যদি মুক্তি পান, তিনি যদি আমাকে নমিনেশন দেন, আমি নির্বাচন করব।’
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে ক্ষমতাসীনরা। সুযোগ পেলেই গণসংযোগ করেছেন প্রার্থীরা। হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশাপাশি টিকেট প্রত্যাশী অনেক নতুন মুখও প্রচার চালিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১ আসনে যথারীতি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দেন, যেখান থেকে আমি ছয়বার নির্বাচিত হয়েছি। এবার দিলেও আমি আবার প্রধানমন্ত্রীকে আমার সিটটা উপহার দিতে পারব।’
চট্টগ্রাম-৫ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রার্থী জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘মানুষের কাছে যাব এবং আমি বিশ্বাস করি অন্যান্য বারের মতো এবারও জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।’
অপরদিকে একই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইউনুচ গণি বলেন, ‘দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, আমি বিশ্বাস করি, আমি দলকে এই আসন উপহার দিতে পারব।’
চট্টগ্রামে সংসদীয় আসনের সংখ্যা ১৬টি। এর মধ্যে বর্তমানে ১৪ দলের শরিকদের চারটি ছাড়া বাকি সব আসন আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে।
চট্টগ্রাম-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, চট্টগ্রাম-২ আসনে তরীকত ফেডারেশনের নেতা নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-৫ আসনে জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৬ আসনে আওয়ামী লীগের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগের ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৮ আসনে জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল, চট্টগ্রাম-৯ আসনে জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামী লীগের ডা. আফসারুল আমীন, চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-১২ আসনে আওয়ামী লীগের শামসুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নাদভী, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
১৬টি আসনের বেশির ভাগ প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত বলে দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে। ১৬টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হলো ৫৬ লাখ ৪১ হাজার ২১৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৫৪ জন এবং ২৭ লাখ ২৭ হাজার ১৬৫ জন মহিলা ভোটার।