‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘ ও কঠিন’
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বলেছেন, যদিও বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছে, তবে এর সমাধান প্রক্রিয়া অনেকটা দীর্ঘ ও কঠিন।
গতকাল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর শেষে ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি টেকসই নয়। প্রত্যাবাসনের পথ অনেক দীর্ঘ ও কঠিন। অনেক বিষয়ে আগেই নিশ্চিত হতে হবে, যাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, নিরাপত্তা এবং মর্যাদাপূর্ণ হয়।’
মন্ত্রী বালাকৃষ্ণান কক্সবাজারের কুতুপালং-বালুখালীর সম্প্রসারিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। যেখানে বিশাল এলাকাজুড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণানের সোমবার মিয়ানমার সফর করার কথা রয়েছে। এ সফরে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে দেশটির শীর্ষ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেসব উদ্বাস্তুর সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সবাই মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।’
এদিকে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, বাংলাদেশ সরকার এবং দেশটির জনগণ ‘সত্যিই চমৎকার’। নানা সীমাবদ্ধতা এবং খুবই প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে মানবিক সহায়তা দিয়েছেন তাঁরা।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও সক্রিয়ভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে, বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরও আর্থিক এবং মানবিক সহায়তা দিচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের আগে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো শক্তিশালী হবে।’
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহযোগিতা করতে আসিয়ান প্রস্তুত রয়েছে।
দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো হলো—ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।