সংলাপ সফল হলে ভালো নির্বাচন হবে, আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা
সংলাপ সংলাপ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এত দিন সভা-সমাবেশ মাতাচ্ছিলেন। শেষ অবধি তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে সরকার। আগামী ১ নভেম্বর সংলাপে বসতে চেয়েছে তারা। হঠাৎ সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেউ বলছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন নিয়ে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, সংলাপে তা কিছুটা হলেও কমবে।
আবার এই সংলাপে সব দলের শীর্ষ নেতারা থাকবেন বলে ইতিবাচক ফল আসবে বলে আশার কথা জানিয়েছেন কেউ কেউ।
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিতে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আগামী ১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সেই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
এর পরেই এ বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান বিশেষজ্ঞরা।
লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘অতীতের সংলাপগুলো সাধারণত মাঝারি স্তরের নেতা বা অ্যাটলিস্ট মহাসচিব পর্যায়ের ছিল। তো আবার শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে সংলাপটা হবে। যাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখেন। তো সেইখানে আমি একটু আশাবাদী। সাত দফার সবগুলোই যে আওয়ামী লীগ মেনে নেবে, এটা মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নাই। একটি, দুটি, তিনটি দফা মেনে নিয়ে যদি একটা ভালো নির্বাচনের দিকে যায়, তাহলে সেটা ভালো হবে। ’
এ প্রসঙ্গে লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘সরকার খুব ভালোই জানে যে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শক্তি এবং আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। সুতরাং এই বৈঠকে যে বিএনপির নেতারা থাকবেন এবং তাঁদেরও যে বক্তব্য আছে। সেগুলো শুনবেন, সেটা জেনেই, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এটাই এই বৈঠকের ইতিবাচক দিক। মাঠে-ঘাটের যে উত্তেজনাকর বক্তব্য, দুই পক্ষ থেকেই দেওয়া হচ্ছিল। সেই উত্তেজনাকর বক্তব্য দেওয়া কিছুদিনের জন্য বন্ধ হতে পারে। এই বৈঠক যদি সফল হয়। ’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে দেওয়া চিঠিতে কিছু কথা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি লিখেছেন, ‘জনাব, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই, আলোচনার জন্য আপনি যে সময় চেয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ০৭-০০ টায়, আপনাদের আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
এদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ সচিবালয়ে বলেছেন, এই সংলাপের ফলে দেশে চলমান সংকটের বরফ গলবে। তবে কারো চাপে পড়ে তাঁরা সংলাপের আমন্ত্রণ জানাননি বলেও জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।