প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘোষিত ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য সম্বলিত চিঠি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
আজ রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার পর ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে এই চিঠি দেয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্যাডে দেওয়া ওই চিঠিতে স্বাক্ষর ছিল ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লেখা চিঠি দুটি গ্রহণ করেন দলের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। পরে তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের দুটি চিঠি আমি হাতে পেয়েছি। যথাযথ জায়গায় এগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এলে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানানো হয়। পরে তারা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে চিঠি দিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে চলে যায়।’
ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব আ ও ম শফিউল্লাহ।
চিঠিতে যা আছে
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠানো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন ড. কামাল হোসেন।
প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা।
যেসব মহান আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত ও আত্মত্যাগের উদ্বুদ্ধ করেছিল- তার অন্যতম হচ্ছে 'গণতন্ত্র।' গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে এবং জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে- রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে- এটাই আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার।
আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। 'ব্যক্তির এক ভোট' এর বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুই নিশ্চিত করেছেন- যা রক্ষা করা আমাদের সকলের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারসমূহ আদায়ের মূলশক্তিতে পরিণত করে-তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন-রাজনীতি কীভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহা সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তাও আমাদের অজানা নয়। এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটানো আজ আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে- জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে এবং সে লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
চিঠির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্যও সংযুক্ত করা হয়েছে।”