এটা জাতীয় ঐক্যজোট নয় : তোফায়েল
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘তাঁরা একটা ঐক্য করেছে। কিন্তু এটা জাতীয় ঐক্যজোট নয়। দেশের একটা ক্রান্তিকালে সব দল যদি এক হয় তখন হয় জাতীয় জোট। তাঁরা একটা বৃহত্তর জোট করেছে।’
আজ শুক্রবার সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় আয়োজিত বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানশেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সিলেট সদর উপজেলা খেলার মাঠে ওই বাণিজ্যমেলার আয়োজন করে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জোটের একজনের সঙ্গে আরেকজনের রাজনৈতিক কোন মিল নাই। আদর্শের কোন মিল নাই। তো আমরা মনে করি, এই জোটটা হয়েছে নির্বাচন করার জন্য। তাঁরা মুখে যত কথা বলুক নির্বাচন করা ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প কোন পথ নাই। কারণ নির্বাচন হবেই।এই নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। আমরা যারা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কেবিনেটে আছি, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দৈনন্দিন কাজ করব। আমরা রুটিনওয়ার্ক করব।’
ঐক্যফ্রন্টের দেওয়া সাত দফা সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে তাঁরা যে সাত দফা দিয়েছে, পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করতে হবে। পদত্যাগ করতে হবে। কোনোটাই সংবিধান সম্মত নয়। সবটাই সংবিধান পরিপন্থী। এই ধরণের দাবি কখনোই গ্রহণ করা হবে না। সুতরাং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তারিখ অনুসারে, বর্তমান সরকারের অধীনে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, সেখানেও ক্ষমতাসীন দেশ ক্ষমতায় থাকে, সেখানেও পার্লামেন্ট বজায় থাকে। নির্বাচনের পরে আরেকটা পার্লামেন্ট হওয়ার পরেই কেবল এটা বিলুপ্ত হয়। সুতরাং তাদের এই দাবিগুলো অযৌক্তিক। একটাও মানা সম্ভব নয়।’
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরো বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোট হয়েছে। ড. কামাল হোসেন আদর্শের কথা বলেন। অথচ তিনি বলেন, আমি তারেক জিয়ার সাথে ঐক্য করি নাই। আমি জামায়াতের সাথে ঐক্য করি নাই। অথচ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক জিয়া, তাঁকে বাদ দিয়ে তিনি বিএনপির সাথে ঐক্য করলেন কীভাবে? অপরদিকে জামায়াতের কথা বলেছেন, তাঁরা তাঁর ঐক্যে আছে। সুতরাং, প্রথমেই তো তিনি একটা অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ বিভ্রান্ত হবে না। গত ১০ বছর ধরে তাঁরা আন্দোলন আন্দোলন করেছে। কিন্তু একদিনের জন্যেও তাঁরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারে নাই। হ্যাঁ দাঁড়াতে পেরেছিল, ১৩ সালে, ১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য। ব্যর্থ হয়েছে।’
নির্বাচনের আগে ছোট মন্ত্রিসভা করার প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধানের কোন বাধ্যবাধকতা নাই। হয়তো বা এই সরকারই থাকবে।’
এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক এ বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের ২০ শতাংশ মানুষ এখনো দরিদ্র। আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশকে দারিদ্রমুক্ত করা হবে।’
এর আগে চেম্বার সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিলেট রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, চেম্বারের পরিচালক মুশফিক জায়গীরদারসহ অনেকে।