উবারচালক হত্যা মামলায় তিনজন গ্রেপ্তার
উবারচালক হেলালউদ্দিন হত্যা ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ বৃহস্পতিবার র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ খবর জানান ক্যাম্প অধিনায়ক রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মালিহাতা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের স্ত্রী লাশ শনাক্ত করলে জানা যায় তাঁর নাম হেলালউদ্দিন। তিনি একজন উবারচালক ছিলেন। ওই ঘটনায় সে সময় হেলালের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা করেন।
ওই মামলার সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অনুসন্ধান চালাতে থাকে র্যাবের একটি গোয়েন্দা দল। শেষমেশ গতকাল বুধবার কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথের নেতৃত্বে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের আভিযানিক দল রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পূর্ব নাখালপাড়া লিচু বাগান এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন রাজধানীর পূর্ব নাখালপাড়ার আবু কাওসার শান্ত (১৮), মো. শহীদ আফ্রিদি (১৮) ও কুনিপাড়ার হাফিজুর রহমান শুভ (১৪)।
উবারচালক হেলালউদ্দিন হত্যা ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করেন র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের। ছবি : এনটিভি
পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উবারের গাড়ি ভাড়া করে তা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে চালককে হত্যা শেষে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে এমন তথ্য জানা গেছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান র্যাব কর্মকর্তা। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ওইদিন চালক হেলালকে ‘এক কথা দুই কথা বলতে বলতে পেছন থেকে লোহার রড দিয়ে প্রথমে শান্ত, আবু কাওসার শান্ত, প্রথমে তাঁর পেছনে আঘাত করে, করলে ড্রাইভার অ্যাবনরমাল হয়ে যায়। এরপরে ওইদিকে... পেছন দিকে যখন সে (চালক) ঘোরে, পরে আবার শুভ তাঁকে আঘাত করে। শুভ তাঁকে আবার আঘাত করে। এইভাবে আঘাত করার পরেও ড্রাইভার একটু দৌড় দেয়। দৌড় দিলে তখন শুভ পিছন থেকে রডটা ছুঁড়ে মারে। ছুঁড়ে মারলে ওটা তাঁর ইয়েতে (শরীরে) বিদ্ধ হয়। শরীরে বিদ্ধ হইলে সে (চালক) তখন মাটিতে পড়ে যায়। তারপরে তাঁকে (চালককে) প্রথমে শান্ত... ছুরি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে জবাই শুরু করে। এরপরে পরবর্তীতে বাকি কাজটা... শ্বাসনালীটা কাটে হচ্ছে- শুভ। প্রথমে শান্ত শুরু করে, শুভ শেষ করে। এইভাবে তাঁকে হবিগঞ্জের কাঁটাখালী এলাকায় হত্যা করে।’
‘হত্যা করে যখণ রক্তটা নিঃশেষ হয়ে যায়। তখন তাঁকে গাড়ির ওই যে পিছনের ইয়েতে ওঠায়, ব্যাকডালায়। তারপরে হবিগঞ্জ থেকে ব্যাক করে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। আশুগঞ্জের একটা খালে এসে তারা তাঁদের ব্যবহৃত রড এবং চাকু নিক্ষেপ করে, পানির মধ্যে।... শুভর বাসা থেকে আমরা ওই গাড়ির চাবি, এবং একটা মোবাইল ফোন, যে মোবাইল ফোনে কথা বলে, সেটা জব্দ করি এবং আফ্রিদির বাসা থেকে আরো দুইটা মোবাইল ফোন আমরা জব্দ করি।’ আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান কোম্পানি অধিনায়ক।