দেশের সক্ষমতা অর্জনে মূল বাধা চারটি
২০১৮ সালের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশ ২০১৭ সালের চেয়ে এক ধাপ পিছিয়ে ১০৩ নম্বরে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জনের পথে মূল বাধা হচ্ছে চারটি। সেগুলো হলো দুর্নীতি, অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবকাঠামো, অদক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং অদক্ষ শ্রমশক্তি।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক-২০১৮ প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশে তাদের পক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রতিবেদনটির বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
২০১৭ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৫টি দেশের মধ্যে ৯৯ থাকলেও এ বছর গবেষণা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার কারণে সেই অবস্থান গিয়ে দাঁড়ায় ১০২-এ। সে হিসাবে এই গবেষণায় স্থান পাওয়া ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১০৩। সূচকে বাংলাদেশের সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে-ব্যবসার গতিশীলতা এবং পণ্য বাজারের দক্ষতার ক্ষেত্রে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর মতো এবারও দুর্নীতির ক্ষেত্রটিকে তারা (ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম) সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছে। অবকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে কিছুটা কিন্তু অবস্থানের খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। পাশাপাশি ব্যুরোক্রেসির বা প্রশাসনের অদক্ষতা এবং একই সাথে লেবার ফোর্স অর্থাৎ শিক্ষিত শ্রমশক্তির অভাব, এই জিনিসগুলো কিন্তু আগের মতোই রয়ে গেছে।’
বাংলাদেশের ৮৩টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এই জরিপে অংশ নেয়। জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জনের পথে মূল বাধা হচ্ছে চারটি। সেগুলো হলো, দুর্নীতি, অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবকাঠামো, অদক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং অদক্ষ শ্রমশক্তি। তবে আশার কথাও আছে। বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর অবস্থান ক্রমাগত নিম্নমুখী। আর বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে ক্রমেই উন্নতি করছে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগামীর জন্য পাঁচটি ফ্যাক্টর এখানে উঠে এসেছে। অবকাঠামোগত প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা, তৃতীয় হলো প্রশিক্ষিত জনবল, চতুর্থ হলো প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা আর পঞ্চমত হলো নীতিমালার উপযোগিতা। শ্রমনির্ভরতা দিয়ে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে প্রতিযোগিতাসক্ষম করে তুলতে পারব না। সুতরাং যদি এই পাঁচটিকে সমন্বিত রাখতে পারি তাহলেই আমরা অর্থনীতিকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অব্যাহত রাখতে পারব। তিনটা স্টেজেই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আমাদের বাড়াতে হবে। প্রতিষ্ঠানে, এরপর প্রতিষ্ঠান থেকে উৎপাদিত পণ্য যে বাজারে নেওয়া হয় সেখানে।’