ছয় বছরেও নিয়োগের ফল না পেয়ে অবস্থান কর্মসূচি
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফল প্রকাশ ও নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নওগাঁর সিভিল সার্জনের দপ্তরে নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থীরা। আজ রোববার সিভিল সার্জনের কার্যালয় ভবনের সামনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাঁরা এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাঁদের ফল প্রকাশ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর ওই মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে কোনো প্রকার উদ্যোগ নিচ্ছে না। অথচ এই ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকা অনেক প্রার্থীর সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে। আবার অনেকের সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে উত্তীর্ণদের নিয়োগ করার দাবি জানান তাঁরা।
নওগাঁ সিভিল সার্জন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে দেশের নয়টি জেলার (নওগাঁ, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, নারায়নগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা, বরিশাল) সিভিল সার্জনের দপ্তরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১২ সালে। নওগাঁ জেলায় ১১৯টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগ্রহীরা আবেদন করেন। এর ভিত্তিতে ২০১৩ সালের ২৬ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ফলাফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা। এর মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে করা এক রিট আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৪ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ওই মৌখিক পরীক্ষার ফল তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। অবশ্য তিন মাস পর একই আদালত ফল প্রকাশের আদেশ দেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ ওই ফলাফল প্রকাশ করে না। বরং ২০১৫ সালে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
এ অবস্থায় সংক্ষুব্ধরা উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে গেলে চলতি বছরের ২১ মে আদালত আবারও মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে নিয়োগটি ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। চূড়ান্ত রায়ের পর সাত মাস অতিবাহিত হতে চললেও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফল প্রকাশ ও নিয়োগের দাবিতে আজ রোববার নওগাঁর সিভিল সার্জনের কার্যালয় ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন নিয়োগ প্রত্যাশীরা। ছবি : এনটিভি
নিয়োগ প্রত্যাশী রুহুল আমিন, আজিজুল হক, নূরে আলমসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে প্রায় ছয় বছর ধরে তাঁদের নিয়োগ ঝুলে আছে। নওগাঁয় লিখিত পরীক্ষায় মোট ৩৩০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়। তাঁদের প্রায় সবাই এখনো মৌখিক পরীক্ষার ফল জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফল প্রকাশ করে মেধা তালিকার ভিত্তিতে দ্রুত নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এ ব্যাপারে নওগাঁর সিভিল সার্জন মোমিনুল হক বলেন, গত মে মাসে আদালতের রায় অনুযায়ী ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে গিয়ে আটকে আছে। ২০১২ সালে নওগাঁ জেলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১১৯টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বর্তমানে ব্যাপক জনবল সংকট চলছে। দ্রুত এই নিয়োগ সম্পন্ন হলে সমস্যা কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠা যাবে।