ডা. জাফরুল্লাহর দুঃখ প্রকাশ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল এম এ আজিজকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। ভুল বক্তব্য ও শব্দ বিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টেলিভিশনের এক টকশোতে গত ১০ অক্টোবর ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে কিছু তথ্য দেন। এতে তিনি বলেন, সেনাপ্রধান এক সময় ‘চট্টগ্রামের জিওসি’ ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ‘কোর্ট মার্শাল’ হয়েছিল।
এরপর ডা. জাফরুল্লাহর সেই মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসত্য ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবাদপত্র পাঠায় সেনা সদর দপ্তর। এতে বলা হয়, ‘সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরি জীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না।’ এ ছাড়া ‘জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর দীর্ঘ বর্ণাঢ্য সামরিক চাকরি জীবনে কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি।’
এ ছাড়া আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্য ‘সেনাবাহিনীর প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়।’
এই পরিপ্রেক্ষিতেই আজ শনিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘সময় টেলিভিশনের টকশোতে আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল এম এ আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম জিওসি ছিলেন না, কমান্ডেন্টও ছিলেন না। তিনি তাঁর কর্মজীবনের এক সময়ে চট্টগ্রাম সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন।’
“তাঁর (সেনাপ্রধান) বিরুদ্ধে ‘কোর্ট মার্শাল’ হয়নি, একবার ‘কোর্ট অব এনকোয়ারি’ হয়েছিল। ভুল বক্তব্য ও শব্দ বিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
ডা. জাফরুল্লাহ আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনী বা জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এরূপ কোনো অভিপ্রায়ও আমার নেই। আমাদের সেনাবাহিনীর গৌরবে আমি গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কালাতিপাত করেছি। তাদের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়েছি এবং যুদ্ধ শেষে আমিই প্রথম কুমিল্লা কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল (সিএমএইচ) চালু করি। পরে আমি ও ডা. আজিজুর রহমান ঢাকা কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতাল চালু করি।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ট্রাস্টি আরো বলেন, ‘জেনারেল আজিজের সম্মানহানী করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আসাবধানতাবশত কোনো মনোকষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্য আমি পুনরায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। জেনারেল আজিজকে অসাবধানতাবশত আমি কোনো মনোকষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্য পুনরায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’