তিতলি মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত : মায়া
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মাঠ প্রশাসনকে সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ত্রাণমন্ত্রী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক আহমাদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘তিন-চারদিন আগেই সরকার তিতলির পূর্বাভাস পেয়েছে। সেই থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়প্রবণ জেলাসমূহকে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।’
মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এ ঘূর্ণিঝড় উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ ভোররাতে গোপালপুরের নিকট দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। তবে এর গতি প্রকৃতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসলে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
মন্ত্রণালয় থেকে ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী এর নির্দেশনা মোতাবেক ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপকূলীয় ১৯টি জেলার প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা-উপজেলা সমূহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুদ রাখা হয়েছে এবং তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’
মায়া চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেকটি উপজেলায় এবং জেলায় সর্বক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রেলরুম এনডিআরসিসির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ১৯টি জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’ মায়া চৌধুরী আরো বলেন, ‘পরিস্থিতির প্রয়োজনে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণকে স্বল্প সময়ের নোটিশে উপযুক্ত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য উপকূলীয় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিপিপি ভলানটিয়ারকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সিপিপি ঢাকা প্রধান কার্যালয়েও কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিকভাবে খোলা রাখা হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে স্থাপিত ওয়্যারলেস স্টেশনের সাথে নিয়মিত বেতার যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।’
পরিস্থিতির অবনতি হলে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার-ভিডিপির সব সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে রেডিও, টেলিভিশন ও টোল ফ্রি আবহাওয়া বার্তার মাধ্যমে আবহাওয়ার তথ্য জেনে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন মন্ত্রী।