বিএনপিকে ধ্বংস করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের মাধ্যমে সরকার বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন রিজভী আহমেদ।
আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে গতকাল বুধবার। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। ৪৯ আসামির মধ্যে বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমান এখন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন।
রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত এ রায় দেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গতকাল সে সাজা দেওয়া হয়েছে, তা স্টেট স্পন্সরড জাজমেন্ট। বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার জন্যই সরকারের বিশেষ ব্যক্তির মনোবাঞ্ছা পূরণে এ রায়। এ রায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ জন্য যে একতরফা নির্বাচন করার জন্য এ রায় দেওয়া হয়েছে, যা একটি কারসাজি।’
২১ আগস্ট হামলা মামলায় জোর করে মুফতি হান্নানের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁর জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন বিষয়ে আদালত কোনো আদেশ দেননি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান রিজভী আহমেদ।
গতকাল বুধবার রায় ঘোষণার পর থেকে দেশব্যাপী বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মির্জা ফখরুলের কোনো ফেসবুক আইডি নেই বলে এ সময় নিশ্চিত করেন রিজভী।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দলটির সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতাকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানও।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তাঁর শ্রবণশক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।