গাজীপুরে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২২ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জের চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আখতারুজ্জামানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য প্রতিপক্ষকে দায়ী করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য দুই প্রার্থী মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি এবং দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি আখতারুজ্জামানের সমর্থনে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা দুটি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
তারা আরো জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর ও ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। কালীগঞ্জের চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বিধাবিভক্ত দুটি পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা শোডাউন করে আসছিল।
সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠান শুরুর পর আগামী সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রতিমন্ত্রী চুমকি এবং কেন্দ্রীয় নেতা আখতারুজ্জামানের কর্মী-সমর্থকরা পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে সভাস্থলে আসতে থাকে।
আখতারুজ্জামানের কর্মী-সমর্থকরা জানান, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সমাবেশে আমাদের বিপুল কর্মী-সমর্থকের সমাগম দেখে প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকরা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে পলাশ এলাকা থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অপর পক্ষের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য আখতারুজ্জামানের কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, সংঘর্ষকালে প্রতিপক্ষের হামলায় ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের সাবেক ভিপি বেনজির আহম্মেদ, জিএস জাকির হোসেন, থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আফছার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী চুমকির এপিএস মাজেদুল ইসলাম সেলিমসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২২ জন কর্মী-সমর্থক এবং পথচারী আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।
হামলাকারীরা দুটি বাস, তিনটি মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি ইজিবাইক ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় তারা একটি মোটরসাইকেল পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া জানান, অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের সর্মথকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।