প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা
সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবিতে আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। একই সঙ্গে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টা রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ে সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন।
অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী এই ধরনের আমলা আমরা এই দেশে দেখতে চাই না।’
আজ রোববার পঞ্চম দিনের মতো শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও পোষ্যদের সংগঠনগুলোর জোট মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এর ফলে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, কোটা বহাল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না। যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হবে তত দিন অবরোধ কর্মসূচি চলবে। আমরা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগে কর্মসূচি পালন করব।
আজ রোববার সন্ধ্যার পর শাহবাগ মোড়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের অবরোধ কর্মসূচি। ছবি : এনটিভি
এদিকে সন্ধ্যায় শাহবাগে সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সারা দেশের সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে অংশ নিতে দেশের সব মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের আহ্বান জানান তিনি।
জামাল উদ্দিন বলেন, আগামীকালের মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
প্রতিবন্ধী কোটা বহাল রাখার দাবি
এদিকে প্রতিবন্ধী কোটা বহাল রাখার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ। কর্মসূচি শেষে আজ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ১১টি দাবি তুলে ধরেন পরিষদের আহ্বায়ক আলী হোসেন। দাবিগুলো হলো, প্রতিবন্ধীদের পাঁচ শতাংশ কোটা বহাল রাখা, প্রিলিমিনারি থেকে প্রতিবন্ধী কোটা রাখা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের আলাদা ৫ শতাংশ কোটার সংরক্ষণ, সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তরুণ প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধি রাখা, প্রতিবন্ধীবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষায় প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট করে বৃদ্ধি, তীব্র মাত্রার প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব চাকরিতে শ্রুতি লেখকের নীতিমালা প্রণয়ন করা, প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা শিথিল করা, কর্মসংস্থানে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশে নিশ্চিত করা এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী অধিদপ্তর করা।