কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সামগ্রিক জীবনাচরণ (কেস হিস্ট্রি) নিয়ে কাল সোমবার বিস্তারিত আলোচনা করবেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। আলোচনার পর চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন বলেও জানা গেছে।

আজ রোববার বিকেলে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল জলিল চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা জানান।

ডা. আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডামের কেবিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সিনিয়র চিকিৎসক আছেন, যাঁরা ম্যাডামের সামগ্রিক কেস হিস্ট্রি জানবেন এবং এক্সামিন করবেন। পরে তা লিখিত আকারে আমাদের (মেডিকেল বোর্ড) কাছে জমা দেবেন। ইতিহাস দেখে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব এবং আগামীকাল আমরা ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। এরপর চিকিৎসার একটি স্পেশাল ফরমেট তৈরি করব। সে অনুযায়ী তাঁর অধিকতর উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা।’

কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল জলিল চৌধুরী। পুরোনো ছবি : এনটিভি

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বলেন, ‘ম্যাডাম যেহেতু সাধারণ রোগী নন, সেহেতু তাঁর আরো উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে আমাদের। আর মূলত তাঁকে স্পেশাল চিকিৎসা দেওয়ার জন্যই আমরা আস্তে ধীরে সামনে এগুচ্ছি। সেজন্য কেবিনে থাকা দুজন ডাক্তার মেডিকেল বোর্ডের পক্ষে ডিটেলস হিস্ট্রি আমাদের কাছে জানাবেন। এরপর আমরা আগামীকাল বোর্ডের সদস্যরা দীর্ঘ সময় এক সঙ্গে বসে আলোচনার চেষ্টা করব, যাতে একটা উন্নত মানের চিকিৎসা তাঁকে আমরা দিতে পারি।’

কী কী হিস্ট্রি লিখিত আকারে তাঁরা আপনাদের জানাবেন- এমন প্রশ্নে ডা. আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার পূর্বের ইতিহাস, বর্তমান ইতিহাস, কেমন খান, কী খেতে পছন্দ করেন অথবা না করেন, কেমন ঘুমান এবং কখন বেশি ঘুমান। এ ছাড়া সামগ্রিক শরীরের অবস্থাসহ আরো অনেক বিষয় থাকে সেসব কেস হিস্ট্রি তাঁরা জেনে আমাদের জানাবেন। এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে আগামীকাল দুপুর ১টার দিকে আমরা বসব। অনেক সময় নিয়ে আমরা ফুল মেডিকেল বোর্ড এক সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেব আসলে আগামীতে তাঁকে (খালেদা জিয়া) কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে।’

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান আরো বলেন, ‘আজ ম্যাডামের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়নি। তিনি আজ অনেক সময় ঘুমিয়েছিলেন। সেজন্য তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি আমাদের। তবে আমরা (মেডিকেল বোর্ডের সদস্য) ম্যাডামের পাশের একটি কেবিনে এক সঙ্গে বসেছিলাম এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আপাতত আমরা তাঁর পূর্বের চিকিৎসা চলমান রাখার জন্য বলেছি।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. মো. আবদুল জলিল চৌধুরী (ইন্টারনাল মেডিসিন), অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক (রিউম্যাটোলজি), অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত (অর্থোপেডিক সার্জারি) ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ (ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন)। এর মধ্যে সজল ব্যানার্জি ঢাকার বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত আরেকজন চিকিৎসককে বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।