রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের জন্য পেশাজীবীদের সরাসরি রাজনীতিতে না আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর মতে, ছাত্র বয়স থেকে যাঁরা রাজনীতি করে আসছেন তাঁদের হাতে নেতৃত্ব থাকা উচিত।

আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তনে অংশ নিয়ে লিখিত বক্তব্যের বাইরে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘গ্রামে প্রবাদ আছে গরিবের বউ নাকি সবার ভাউজ (ভাবি)। রাজনীতিও হয়ে গেছে গরিবের বউয়ের মতো। যে কেউ যেকোনো সময় ঢুকে পড়তে পারে, বাধা নাই।’

বিষয়টির ব্যাখা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সবাই...ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি ডাক্তারি পড়ি...ভিসি সাহেবও অবসরের পর রাজনীতি করবেন। যাঁরা সরকারি চাকরি করেন...জজ সাহেব যাঁরা আছেন ৬৭ বছর চাকরি করবেন। অবসরের পর বলবেন, আমিও রাজনীতিবিদ। আর্মির জেনারেল হওয়া, সেনাপ্রধান হওয়া, সরকারি সচিব, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, কেবিনেট সেক্রেটারি অবসর কইরা বলেন, আমি রাজনীতি করব। কোনো রাখঢাক নাই। যার ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা তখনই রাজনীতিতে ঢুকে...।’

‘চাকরি করে যা করার করছে। এরপর বলছে রাজনীতি করব। আমার মনে হয় সব রাজনৈতিক দলকে এটা চিন্তা করা উচিত। হ্যাঁ বিশেষজ্ঞের দরকার আছে। অনেক সময় বলা হয় পেশাভিত্তিক পার্লামেন্ট। হ্যাঁ, পেশাভিত্তিক করেন। এমবিবিএস পাস করে সরাসরি রাজনীতি করেন। কোনো অসুবিধা নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে চাকরিতে না ঢুকে সরাসরি রাজনীতিতে ঢুকেন,’ যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।

আবদুল হামিদ আরো বলেন, ‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন ডিআইজি, আইজিরাও রাজনীতি করবেন। মনে মনে কই, রাজনীতি করার সময় তোমার বাহিনী দিয়ে...বাড়ি দিছ। তুমি আবার আমার লগে আইছ রাজনীতি করতে। কই যামু।’

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘ছোট থেকে বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা রাজনীতি করছে তাদেরই রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এটা হয় না বলেই রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হয় না আর।’

রাষ্ট্রপতির মতে, যারা বিশেষজ্ঞ তাদের মতামত নেওয়া যেতে পারে বা বিশেষ উপদেষ্টা কমিটিতে রাখা যেতে পারে, কিন্তু সরাসরি রাজনীতিতে তাদের আসা উচিত না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, এ জন্য তাদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। ডাকসু নির্বাচন হলে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতেও নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ছাত্রদের উদ্দেশে আবদুল হামিদ বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে যেন ভেজাল পরিবেশের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।’