নড়বড়ে কাঠের সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
পাটাতন ভাঙা নড়বড়ে কাঠের সেতু। মানুষ উঠলেই দুলতে থাকে সেতুটি। পড়ে যাওয়ার শঙ্কা নিয়েই দুলতে দুলতে পারাপার হয় লোকজন। সেতুর ভাঙা পাটাতনের ফাঁকা স্থানে প্রতিনিয়ত আহত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।
বলছিলাম ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের সান্দিয়াইন গ্রামের শীলা নদীর কাঠের সেতুটির কথা। সাত গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে ওই কাঠের সেতুটি। শেষ কবে সেতুটি মেরামত করা হয়েছিল তা কেউ বলতে পারেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রসুলপুর ইউনিয়নের সান্দিয়াইন, পাড়া সান্দিয়াইন, রসুলপুর, ছয়ানী রসুলপুর, নামা লক্ষ্মণপুর, বাড়া ও চিলাকান্দা গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ এই সেতুটি।
ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদর, হাসপাতাল ও হাটবাজারে যাতায়াত করতেও এই নড়বড়ে সেতুটি একমাত্র ভরসা। এই সেতুর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও।
সান্দিয়াইন গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী (৬৫), আবুল হাশেম (৬০) ও হাবিবুল্লাহ (৫০) জানান, তিন বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সংস্কারের অভাবে পাটাতন ও রেলিং ভেঙে পড়েছে। খুঁটিও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সেতুটির ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করলেই মানুষ ও সেতু সমান তালে দুলতে থাকে। এর চেয়েও বেশি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে। ভাঙা পাটাতনের অংশটি লাফ দিয়ে পার হতে হয়। দুর্ঘটনার শঙ্কা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।
রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে পরিষদের উদ্যোগে লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএসপি) বরাদ্দ থেকে কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানিয়েছেন, সেতুটির কাঠের পাটাতনের অধিকাংশই ভেঙে পড়েছে। বাকি অংশেও পচন ধরেছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেতু দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করা শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁদের উদ্বিগ্ন থাকতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কাঠের সেতুর স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণের।
এ প্রসঙ্গে রসুলপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মইনুল হকের আমলে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুটি নির্মাণকালে নিম্নমানের অপরিপক্ক গজাড়ি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছিল। বৃষ্টিতে সেতুর খুঁটি ও রেলিং পচে নষ্ট হয়েছে। উইপোকা কাঠ খেয়ে ফেলেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান জানান, চলতি এলজিএসপি থেকে সেতুটি মেরামতসহ পাকা সেতুর জন্য প্রকল্প প্রস্তাব প্রকৌশল শাখায় পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন ও বাজেট পেলেই সেতু মেরামত বা পাকাকরণ কাজ করা হবে।